প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কেন্দ্রে একজনকে অবৈধ সুবিধা দেয়ায় অন্যদের ক্ষোভ - দৈনিকশিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কেন্দ্রে একজনকে অবৈধ সুবিধা দেয়ায় অন্যদের ক্ষোভ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি |

ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রে এক নুসরাত নামে এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাবার পরেও অতিরিক্ত ৫মিনিট সময় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এই প্রার্থীকে উত্তর বলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে ১২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।  প্রত্যক্ষদর্শী অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা বিষয়টির প্রতিবাদ করলেও দায়িত্বরতদের থামানো যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী জানায়, ঘটনা দেখে মনে হয়েছে নুসরাত যেন শতভাগ নম্বর পায় সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্বে ছিলেন হরচন্দ্র স্কুলের সহকারি শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ। তাকে সহায়তা করেছেন প্রশাসন ক্যাডারের একজন প্রচারউন্মুখ কর্মকর্তা। 

সংক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা দায়িত্বরত ম্যাজিষ্ট্রেট এনডিসি বশির গাজীর কাছে এ বিষয় অভিযোগ জানালে তিনিও কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং তার উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ একজন কর্মকর্তার সঙ্গে পরীক্ষার্থী নুসরাতের স্বামীর সুসম্পর্কের কারণে সে পরীক্ষার হলে এই সুবিধা ভোগ করেছেন।  

প্রার্থীদের অভিযোগ, হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি হলে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত। তাকে হলে রেখে যাওয়ার সময় দায়িত্ব প্রাপ্তশিক্ষক ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরডিসি বশির গাজীর সঙ্গে কথা বলে চলে যায়। এরপর পরীক্ষা চলার পুরো সময়ে দায়িত্বরত শিক্ষকরা তার কাছে গিয়ে একাধিকবার উত্তর বলে দেয়। পরীক্ষা শেষের ঘন্টা বাজলে সকলের উত্তরপত্র নিয়ে গেলেও তাকে প্রায় ৫ মিনিট বেশি সময় দিয়ে উত্তর লিখতে সহায়তা করা হয়। একজন পরীক্ষার্থীকে এমন অবৈধ সহযোগীতা করায় কেন্দ্রের অপরাপর প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টিহয়। তারা আগামীকাল শনিবার মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কর্মকর্তাদের এহেন আচরণের বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানকেও জানানো হয়েছে বলে একাধিক প্রার্থী জানান। এছাড়া মহাপরিচালককেও জানানো হয়েছে।     

নুসরাতকে অবৈধ সুবিধা দেয়ার বিষয়ে বশির গাজী সাংবাদিকদের জানান, কিছু পরীক্ষার্থী আমার কাছে এসে অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থীকে সময় বেশি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জোহর আলী সাংবাদিকদের বলেন, কাউকে পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময় দেয়া হলে সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নুসরাতের স্বামী  ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও পারিবারিকভাবে চাঁদাবাজ ও ছ্যাঁচরা হিসেবে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। বর্তমানে তিনি ঝালকাঠীতে একাধিক ভুইঁফোড় অনলাইনের ঝালকাঠী প্রতিনিধি, একাধিক আন্ডারগ্রাউন্ড বাংলা দৈনিক ও টিভির সাংবাদিক পরিচয় দেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিএনপিপন্থী একাধিক আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেন নুসরাতের স্বামী। ঝালকাঠীতে কর্মরত একাধিক প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীকে বিজ্ঞাপনের পার্সেন্টেজ দেয়ার অভিযোগ নুসরাতের স্বামীর বিরুদ্ধে। প্রচারউন্মুখ ক্যাডার কর্মকর্তারা নুসরাতের স্বামীকে বিএনপি নেতা ও ছ্যাচঁরা টাইপের জেনেও সখ্য বজায় রাখেন। এমন অভিযোগ ঝালকাঠীর প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও সুধীজনদের।

অনুসন্ধানে জানা যায়,  ডাচবাংলা ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করায় নুসরাতের স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী প্রতারণা মামলা করেন। মামলার আলামত হিসেবে ফেসবুকে ডাচবাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় লেখার স্ক্রীনশটও আদালতে জমা হয়। নুসরাতের স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীর পিতা একটা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বরিশাল আদালতে মামলাটি হয় ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে।

জানা যায়, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করার নুসরাতের স্বামীর প্রথম স্ত্রীও মামলা করেন। জামাত-মালিকানাধীন ও সনদবিক্রিতে শীর্ষ অবস্থানে থাকা ঢাকার উত্তরার এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামের ইতিহাসে অনার্সের সনদ কিনলেও তা সরকারি তদন্তে জাল প্রমাণিত করেন প্রথম স্ত্রীর আত্মীয়রা। প্রতারণার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দেয়। পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাও দেয়া হয় নুসরাতের স্বামীর প্রথম স্ত্রীকে।

এছাড়া ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত নুসরাতের স্বামীর বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় ২৫টির বেশি জিডি হয়। একাধিকবার র‌্যাব হানা দেয় বাড়ীতে। পরে পালিয়ে ঢাকা গিয়ে একাধিক দৈনিক পত্রিকার কার্ড বানিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়া শুরু করে। ধরা পড়ার পর তাকে জেলে যেতে হয়। ছাড়া পেয়ে আবার ঝালকাঠী ফিরে যায় সাবেক ওই ছাত্রদল নেতা। গিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়া শুরু করেন।        

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070459842681885