প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় পাবনার সুজানগরের সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে এক বখাটে।
বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিচার দাবি করছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেলে ওই ছাত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বাদী হয়ে অভিযুক্ত মো. ফাহাদ মোল্লাকে আসামি করে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ফাহাদ (১৭) সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের মো. ফারুক মোল্লার ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলেন, ফাহাদ দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উত্ত্যক্ত করছিল। প্রায়ই স্কুলে যাতায়াতের সময় পথরোধ করে প্রেমের প্রস্তাব দিত। আমি এতে রাজি না হওয়ায় সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।
‘বুধবার বান্ধবীদের সঙ্গে স্কুল ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে আবারও ফাহাদ তার প্রস্তাব মেনে নিতে চাপ দেয়। আমি এতে রাজি না হওয়ায় রাস্তা থেকে টেনে পাশে নিয়ে আমাকে কিল ঘুষি, লাথি মেরে ফেলে দিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটায়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে বুধবার স্কুল শিক্ষার্থীকে হঠাৎ মারধর করতে শুরু করে ফাহাদ। শিক্ষার্থীর চিৎকারে বিদ্যালয়ের স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে বখাটে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে বিদ্যালয়টির কয়েকশত শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়টির গেটে বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধন করেন।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার মূল হোতাকে গ্রেপ্তারের পর দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে চাই। স্কুলে যাতায়াতের সময় বখাটেদের উপদ্রব ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন।
সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাল উদ্দিন বলেন, এমন বর্বরোচিত হামলার ঘৃণা জানিয়ে ওই দিনই রাতে আমি নিজে বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বখাটে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
আমার বিদ্যালয়ে প্রায় নয় শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে। আমরা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক করারও চেষ্টা করছি।
সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার বলেন, আঘাত গুরুতর হলেও এখন ওই শিক্ষার্থী আশঙ্কামুক্ত। আপাতত হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, মামলাটি দায়ের হওয়ার পর পরই ওই বখাটেকে পুলিশ তৎপর রয়েছে। রাতে কয়েকটি স্থানে অভিযান করেও তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।