ফ্রান্সের লিয়ন শহরের মেয়র সেখানকার স্কুলের দুপুরের খাবারের তালিকা থেকে মাংস বাদ দিয়েছেন। মেয়রের এই পদক্ষেপে তার সমালোচনা শুরু করেছে দেশটির সরকার। খবর বিবিসির।
এ প্রসঙ্গে গ্রিন পার্টির সদস্য ও মেয়র গ্রেগরি ডুশে বলেন, করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের মধ্যে এই পদক্ষেপ নেয়ার ফলে খাবার প্রদানের সেবা আরও গতিময় ও দ্রুত হবে।
কিন্তু ফরাসি সরকার মেয়রের এই কাজ সহজভাবে নিতে পারছে না। এর ফলে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে অভিযোগ তুলেছে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী জুলিয়েন ডেনরম্যান্ডি টুইট করেছেন, ‘আসুন আমরা আমাদের শিশুদের থালায় আদর্শ দেখানো বন্ধ করি। আসুন ভালোভাবে বৃদ্ধির জন্য ওদের যা দরকার তা-ই দেই।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেন, ফরাসি কৃষক ও কসাইদের জন্য এটি ‘অগ্রহণযোগ্য অপমান’। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে গ্রিনদের নীতিবাগীশ ও অভিজাত নীতি জনপ্রিয় শ্রেণিকে বাতিল করে দিচ্ছে। অনেক শিশু প্রায়শ শুধু স্কুলের ক্যান্টিনেই মাংস খেতে পায়।’
জবাবে ডুশে বলেন, গত বছর মহামারির সময় তার ডানপন্থী পূর্বসূরী যখন মেয়র ছিলেন তিনিও তখন একই নিয়ম চালু করেছিলেন। মাংস বাদ দেয়া হলেও তালিকায় মাছ ও ডিম থাকবে। ডুশে জানান, সকল শিশুর জন্য খাবারের তালিকায় ভারসাম্য রাখা হবে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, শিশুদের জন্য নিরামিষ ডায়েট নিরাপদ। কিন্তু আমিষ, লৌহসহ অন্যান্য খনিজ যেন অন্তর্ভুক্ত থাকে তার জন্য অতিরিক্ত যত্নবান হতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
তবে ফ্রান্সে খাবারের ক্ষেত্রে স্বাদ পরিবর্তনের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। ২০১৮ সালে নতুন এক আইনে স্কুলগুলোতে একদিন নিরামিষ খাবার রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফ্রান্সের রেস্টুরেন্ট রেটিংয়ে সম্প্রতি একটি নিরামিষ রেস্টুরেন্ট ‘মিশেলিন তারকা’ পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
মেয়র গ্রেগরি ডুশের এই নিয়ম শুধুমাত্র মহামারির কারণে নেয়া পদক্ষেপ হলেও ফরাসি প্রথায় পরিবর্তন আনতে তিনি সরব রয়েছেন। ফান্সের বিখ্যাত ‘ট্যুর ডি ফ্রান্স’ নামের সাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতাকে ‘পুরুষালী ও দূষণ সৃষ্টিকারী’ বলে সমালোচনা করেছেন তিনি।