জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কার্য ভাঙচুর ও অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় মানববন্ধন করেছেন তারা। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার প্রতিবাদ জানান সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা। এ মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সমিতির সভাপতি ও গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ ভূইয়া। মানববন্ধনে রাজধানীর সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে অবমাননা করা মানে বাংলাদেশকে অবমাননা করা, বাঙালি জাতির অনুভুতিতে আঘাত করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করা। ভাস্কর্যের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক বা বিরোধ নেই। হাজার বছরের মুসলিম সভ্যতার দিকেও যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখব বিশ্বের অনেক ইসলামি দেশগুলোতে সংস্কৃতির নানা উপস্থাপনের মধ্যে ভাস্কর্য অন্যতম প্রধান হিসেবে স্থান করে আছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক সমাজ। মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাব সামনে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) দিনাজপুর জেলা শাখার ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন সমিতির জেলা শাখার সভাপতি মো. সাইফুদ্দিন। মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আহম্মেদ, দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লায়লা হাসিনা বানু, দিনাজপুর জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রৌশন আরা বেগম, সুলতানা ফেরদৌসী, সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মোহাম্মদ সাব্বির হোসেন, সহকারী শিক্ষক মো. রাজিউদ্দিন চৌধুরী ডাব্লিউ, মমতাজ উদ্দীন, আনিসুর রহমান, শামসুল হক, সাজ্জাদ হোসেন, মাকসুদুর রহমান, মেহেদী মাসুম চৌধুরীসহ অনেকে।
বঙ্গবন্ধুর ভার্স্কয ভাঙচুর এবং অবমাননার প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জেও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে সকাল ১১ টায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম ফজলুর রহমান ও সহকারী শিক্ষক মো. শফিউল আজম, আজমাল হোসনে, মো. মনরিুজ্জামান, গাজল চন্দ্র সরকার ও মো. আব্দুর রহমানসহ অনেকে।
এসময় বক্তারা বলেন, জাতির পিতার সম্মান, রাখবো মোরা অম্লান। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদশে, বঙ্গবন্ধু মানে লাল-সবুজের পতাকা। বঙ্গবন্ধুকে অপমান মানে সমগ্র বাংলাদশেকে অপমান করা, সমগ্র বাঙালি জাতিকে অপমান করা। যারা এই ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদরে অতিদ্রুত আইনরে আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
কুড়িগ্রামেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা। সকাল ১১টায় কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সহ-প্রচার সম্পাদক খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা কমিটির সভাপতি রোকসানা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী, সদস্য খন্দকার শামিমা আখতার, সহকারী শিক্ষক দেওয়ান এনামুল হক, রেজাউল ইসলাম রাসেল, ইমরুল কায়েস, আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে। এসময় বক্তরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
গত ৪ ডিসেম্বর রাত দুইটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এসময় ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশ ভেঙে ফেলা হয়। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেদিনই ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দিন মামলা করেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।