রাজধানীর সরকারি বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলীর বিরুদ্ধে নতুন আবাসিক হলের একাধিক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। আহত এক ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বাঁধনের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম শুক্রবার রাতে বলেন, ‘আমার বোন বিকেলে কল দিয়ে বলেছে, তাঁকে সভাপতি শেলী প্রায় হুমকি দেয়, সিট নিয়ে ঝামেলা করে, অনেক সময় চাঁদা চায়। আজ সন্ধ্যায় শেলী দলবল নিয়ে তাঁর কক্ষে এসে তাঁকে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে আমি কলেজে এসেছি।’
সভাপতির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতার স্ত্রীর রুমমেট হওয়ার দাপট দেখানোর অভিযোগ। সভাপতি হওয়ার পর সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সভাপতি হওয়ার পর তাকে সালাম এবং হলের মধ্যে হাঁটার সময় সাইড না দেয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন অনেক ছাত্রীর ওপর। শুক্রবার রাতে সভাপতির হাতে অনেক ছাত্রীই মার খেয়েছে। আবার সভাপতি নিজেও লাঞ্ছিত হয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে সেলিনা আক্তার শেলী বলেন, ‘আসলে আমি চাই যা হয়েছে তাই ছড়াক, মিথ্যা যেন না ছড়ায়। আমরা কমিটিতে আসার পর মেয়েদের সঙ্গে পরিচিত হইনি। আমার সাধারণ সম্পাদক নতুন বিল্ডিংয়ে আর আমি পুরাতন বিল্ডিংয়ে থাকি। আমি নতুন বিল্ডিংয়ে মেয়েদের সাথে পরিচিত হতে যাই, যদিও সেক্রেটারি ছিল না। ভাবলাম সে পরে এসে আমার ব্লকে পরিচিত হয়ে যাবে। আমি গিয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলি, তাদের দিক নিদর্শনা দিই। বলি যে, আমাদের মেনে চলবা, আমরা তোমাদের ভালোর জন্যই এসেছি, ভালো করব।’
শেলী বলেন, ‘কিন্তু একটা রুমে বাঁধন নামে এক মেয়ে ওই রুমের সকল মেয়েকে বলে কেউ বের হবি না। সেক্রেটারি নেই মানে এই ব্লকে কোনো নেতা নেই। তখন আমরা সিনিয়র হিসেবে রাগ হই এবং আমি তাঁর দিকে আঙুল দেখিয়ে বলি, তুমি কাকে কী বলছ? কথা-কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে সে আমার মুখে খামচি দেয়, আমার হিজাব খুলে ফেলে এবং আমার তলপেটে আঘাত করে। আমি তার গায়ে হাত দিইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, ‘আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি আমরা মিউচুয়াল করে নিয়েছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ মে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে সোনালী আক্তার শেলী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হাবীবা আক্তার সাইমুনকে মনোনীত করা হয়।