উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে টানা ২০ দিন সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর ফলে জেলার সাতটি উপজেলার ৩৮২টি স্কুল প্লাবিত হয়ে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
তবে গত কয়েক দিন ধরে নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এরইমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। সচল হয়েছে জেলা শহরের সঙ্গে ছাতক ও তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ। খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন উপজেলায় বন্যায় প্লাবিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে বন্যার পানি কমলেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সুনামগঞ্জের ২৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ, বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র, বাথরুম এবং খেলার মাঠের ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর বন্যায় সুনামগঞ্জের সাতটি উপজেলায় ৩৮২ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়। যার মধ্য ২৩৭টি বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টাকার পরিমাণে যা ৮৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা। তবে এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ছাতক, দোয়ারা বাজার ও তাহিরপুর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জানান, এই বন্যায় বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ একবারে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি কমায় শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসলেও খেলার মাঠ ব্যবহার করতে পারছে না।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল হক বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যায় আমার বিদ্যালয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কেবল তাই নয়, ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ গভীর হয়ে যাওয়ায় সেখানে নামতে পারছে না। চলাফেরা ও খেলাধুলা করতে পারছে না। এছাড়া বন্যার কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠাও আমাদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে উঠবে।
জগাইরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফৈরদৌস আরা বলেন, বিদ্যালয়ের অফিসরুমে পানি ডুকে যাওয়ায় আমরা বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বিদ্যালয়ের দুতলায় উঠিয়ে নিয়ে গেছি। তারপরও বিদ্যালয়ে চেয়ার-টেবিলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে। তবে বন্যার পানিতে ২৩৭টি বিদ্যায়লের বেশ ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ৮৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা, তবে এটি আরও বাড়তে পারে। আমরা সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।