বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীকে পেটালেন শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীকে পেটালেন শিক্ষক

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর রাণীনগরে নাহিদ হোসেন নামে ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের কাঁধে ওই শিক্ষার্থীর হাত পড়ার জের ধরে সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী নাহিদ শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মনোহরপুর গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে। 

নাহিদ হোসেন বলেন, ‘সোমবার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠান শেষের দিকে পুরস্কার বিতরণের আগ মুহূর্তে একটি ক্লাসরুমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুধিজনরা উপস্থি ছিলাম। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উত্তম কুমার মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার সময় আমরা পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের গাদা-গাদির কারণে আমি মাটিতে পড়ে যাওয়ার সময় অজান্তেই সামনে থাকা শিক্ষক উত্তম কুমারের কাঁধে হাত লাগে। এসময় তার ঘারে কেন হাত দেওয়া হলো, এমনটি জানতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে ওই শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। এরপরেও তিন দফায় শিক্ষক উত্তম কুমারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বাড়িতে চলে আসি।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘এরপর বেলা আড়াইটা নাগাদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক স্টাপ, ইউনিয়ন পরিষদের দুইজন মেম্বার ও মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান সঙ্গে আসেন। তখন আমার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। শিক্ষকরা আমাকে বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে কোনো কথা বলার আগেই ফজলার রহমান আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন এবং আমি কারো ইন্ধনে ওই শিক্ষকের কাঁধে হাত দিয়েছি কি-না তা জানতে চান। আমি তাদের বলেছি যে আমার অজান্তে এমনটা হয়েছে এবং শিক্ষকের নিকট ক্ষমা চেয়েছি কিন্তু তারপরেও আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন।’

নাহিদের বাবা আশরাফ আলী বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো দোষ করলে অন্তত আমাকে জানানো উচিৎ ছিল, কিন্তু আমাকে না জানিয়ে বাড়িতে এসে লাঠি দিয়ে মারপিট করে চলে গেলো।’ 

নাহিদের দাদি আয়েশা বলেন, ‘মারপিটের সময় আমি নিষেধ করতে গেলে তারা আমার কোনো কথাই শোনেননি।’  

সহকারী শিক্ষক উত্তম কুমার বলেন, ‘অনুষ্ঠানে ছবি তোলার সময় নাহিদ পেছন থেকে আমার কাঁধে হাত রেখেছিল। কেন কাঁধে হাত রেখেছে এমনটি বলার সঙ্গে সঙ্গে নাহিদ সেখান থেকে চলে যায়। তবে পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনেই ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে মিলাদের তবারক না নিয়েই চলে যায়। কিন্তু কাঁধে হাত রাখার পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে, এমনটি ধারণা করে প্রধান শিক্ষকসহ সব শিক্ষক এবং মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার স্বপন ও মামুনসহ তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে ফজলার মাস্টার শাসনস্বরূপ একটা কিংবা দুইটি বাড়ি মেরেছে।’

ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার মামুন হোসেন বলেন, ‘ঘটনা শুনে নাহিদের দাদার হুকুমে ফজলার মাস্টার শাসনমূলক দুটি বাড়ি মেরেছে।’

মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান বলেন, ‘শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। নাহিদ আমার নাতি হওয়ায় তাকে একটু শাসন করেছি। তবে এসময় নাহিদের বাবা-মা বাড়িতে না থাকলেও দাদা-দাদি ছিলেন। 

শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পণ্ড করার জন্য এক শিক্ষককে গলা ধাক্কা দিয়েছে। কেন একজন শিক্ষককে গলা ধাক্কা দেওয়া হলো, এটি জানার জন্য আমরা মিটিং করে নাহিদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে শিক্ষক ফজলার রহমান নাহিদকে একটু শাসন করেছে। এর আগে ওই ছাত্র বিদ্যালয়ের কয়েকটি ফ্যানসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।

’বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, ‘অসুস্থ থাকার কারণে আমি বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি। তবে প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে আমি শুনেছি আমার বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক নাহিদকে মারপিট করেনি। নাহিদের দাদা-কি বড় আব্বা তাকে শাসন করেছে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখবো।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে কি যেন একটা ঝামেলা হয়েছে শুনে সোমবার রাতেই প্রধান শিক্ষককে ফোন করেছিলাম, কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমাকে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেননি। শুধু বলেছেন যা হয়েছে তা লিখিতভাবে জানাবো।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর একাডেমিক সুপার ভাইজারকে ডেকেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036067962646484