বিচারকের হাতে অভিভাবক অপদস্থ : এবার প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের - দৈনিকশিক্ষা

বিচারকের হাতে অভিভাবক অপদস্থ : এবার প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি শিক্ষার্থীদের

বগুড়া প্রতিনিধি |

এবার প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের অপসারণের দাবি জানিয়েছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। তাদের দাবি, রাবেয়া খাতুনের দায়িত্বহীনতা ও বিচারককে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার ফলে সেদিন ওই অপদস্থের ঘটনা ঘটে। এমনকী ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।

সোমবার (২৭ মার্চ) বিদ্যালয়ের সামনে এই দাবি জানায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিচারকের পা ধরে অভিভাবকের মাফ চাওয়ার ঘটনার আরেক কুশিলব স্বয়ং প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে প্রধান শিক্ষক তাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। তাদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার ভয়ও দেখান তিনি।

এ অবস্থায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে তারা শঙ্কিত। এজন্য তারা প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের অপসারণের দাবিতে সোমবার মানববন্ধনের উদ্যোগ নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ১১টার দিকে তারা বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। বিষয়টি টের পেয়ে প্রধান শিক্ষক তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতেও কাজ না হলে তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে জানান। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের ভেতরে নিয়ে কথা বলেন। এরপর গাড়িতে করে আবার চলে যান।

অন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী দাবি করে বলে, বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে মানববন্ধন করার উদ্যোগ নেওয়ায় আমাদের বকাঝকা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভেতরে যাওয়ার পর আমাদের জেরা করা হয়। এসময় বলা হয়, কেন আমরা সাংবাদিকদের ডেকে এনেছি।

এসময় এক অভিভাবক বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈষম্য করতে পারেন না। কিন্তু উনি তাই করে আসছেন। বিচারক চলে গেলেও

প্রধান শিক্ষকের কোনো বিচার না হলে তিনি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে থাকবেন। আবার বিক্ষোভ করায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা থেকে শুরু করে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটাবেন।

তিনি আরও বলেন, এই প্রধান শিক্ষক প্রায় ১৬ বছর ধরে এক স্কুলে আছেন। তিনি এখানে একক আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন।

এসময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াসমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবি ও তদন্তের বিষয়ে কথা বলতে চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন। তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো কথা বলিনি। আর আমি এখন তদন্তের অধীন। এজন্য এসব বিষয়ে আর কোনো কথা বলবো না। তদন্ত শেষ হলে বলবো। কারণ আমিও পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কে ভয় দেখিয়েছে তা ঠিক বলতে পারবো না। তবে গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তদন্তটি সম্পূর্ণ সুষ্ঠু হবে।

এর আগে ২১ মার্চ বিচারকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর মাকে অপদস্থ করার অভিযোগে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।

বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে পড়াশোনা করত। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকে। গত সোমবার ওই বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। তবে নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তার অপর সহপাঠীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।

ওই রাতেই বিচারকের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সহপাঠীদের কটূক্তি করে পোস্ট দেয়। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে বিচারক রুবাইয়া ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। সেখানে তিনি ওই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন। এসময় দুই অভিভাবকে ওই বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইয়ে নেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে ২৩ মার্চ ওই বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্ট।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070109367370605