বিজয়ের সেই অবিস্মরণীয় স্মৃতি - দৈনিকশিক্ষা

বিজয়ের সেই অবিস্মরণীয় স্মৃতি

নূরে আলম সিদ্দিকী |

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর এক সুন্দর অপরাহ্নে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে শাহজাহান সিরাজ ও আমি তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরে অবতরণ করি। আনন্দ ও বেদনায় ভরা মনটা কেমন যেন একটা অদ্ভূত অনুভূতিতে বিভোর ছিল। সমস্ত অনুভূতির মধ্যে আশ্চর্য এক শিহরণ, রক্তের কণায় কণায় উদগ্র উত্তেজনা অনুভব করছিলাম। সেই অনুভূতি লেখনির মাধ্যমে প্রকাশ করার শক্তি বা ভাষা আমার নেই। মরুভূমির নিষ্কলুষ সূর্যোদয়ের মতো হৃদয়টা পূত-পবিত্র অগ্নিচ্ছটায় উদ্ভাসিত ছিল। এটি কোনদিনই বিস্মৃত হওয়ার নয়। দুটি ঘটনা সমস্ত চিত্তকে একটি অবর্ণনীয় বেদনায় দুমড়ে-মুচড়ে দিচ্ছিল।লাখো লাখো মানুষের বুকনিঃসৃত রক্তদানের পূত-পবিত্র গর্বের অনুভূতি বাঙালি নারীর সতীত্ব হারানোর যন্ত্রণায় কুঁকড়ে কেঁদে ওঠার বেদনাপ্লুত অনুভূতি। অন্যটি আমার প্রাণের মুজিব ভাই তখন কোথায় কী অবস্থায় আছেন, জানি না। আমি সুনিশ্চিত, মুজিব ছাড়া মুজিবের বাংলার স্বাধীনতা অপূর্ণ তো রয়েই যায়, সেই স্বাধীনতা আমি কেন, কোন বাঙালিরই কাম্য নয়। 

কারাগারের নির্যাতিত জীবনে মায়ের মৃত্যুসংবাদ শ্রবণ করে প্যারোল পাইনি। মৃত্যুপথযাত্রিনী মায়ের কান্না ইথারে ভেসে এসে আমার হৃদয়কে শুধু দগ্ধীভূতই করেনি, বেদনায় যন্ত্রণায় আমার অনুভূতিকে শুধু ক্ষতবিক্ষতই করেনি, মায়ের আমাকে দেখতে চাওয়ার শেষ আকুতি হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করলেও মৃত্যুকালীন সময়ে শত প্রচেষ্টায়ও আমি প্যারোল পাইনি। আমার মা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার মুহুর্তে তাঁর শিয়রে বসে  মমত্বের আবীর মাখানো ছোঁয়াটুকু দিতে পারিনি, মরণের প্রাক্কালে তাঁকে একটিবার মা বলে ডাকতে পারিনি।  কলেমা পাঠ করতে পারিনি, তাঁর জানাজা পড়তে পারিনি, লাশ কবরে নামিয়ে দাফন করতে পারিনি।

উড়ন্ত হেলিকপ্টারে বসে আনন্দ ও বেদনাবিধুর হৃদয়ে তাই ভাবছিলাম, আমার মায়ের দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন। দেশমাতৃকার মাটি আজ শত্রুমুক্ত হয়েছে। স্বাধীনতার সূর্যকিরণের বিকীর্ণ ছটায় আমার মাতৃভূমির মাটি আজ আলোকিত, উদ্ভাসিত। মুক্ত,স্বাধীন সার্বভৌম এ মাটির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে আর কেউ কোনদিন ব্যাহত করতে পারবে না, খর্ব করতে করতে পারবে না, পর্যুদস্ত করতে পারবে না। হেলিকপ্টারে উপবিষ্ট আমি তখন ছাত্রলীগের সভাপতি। জীবন-সায়াহ্নে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বর্তমান ছাত্রলীগের কর্মীসহ কোটি কোটি ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনদের হৃদয়নিঃসৃত পূত-পবিত্র আশীর্বাদ করতে চাই, সেদিন আমরা দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে দীপ্ত পদচারণায় বিস্তীর্ণ পথ হেঁটেছিলাম, সেই দেশটিকে সুসংহত করার জন্য, তার ভৌগলিক অখন্ডতাকে অবিচ্ছিন্ন ধারায় ধরে রাখার জন্য প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, রুটি-রুজির নিশ্চয়তা এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে লালনের এবং পরিশীলিত মানসিকতার চর্চার জন্য নতুন প্রজন্মের সাধনা সম্পূর্ণ ক্লেশমুক্ত ও নিষ্কলুষ হোক। দেশমাতৃকার শৃঙ্খলমুক্তির জন্য ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত আমরা দু’টি প্রজন্ম আত্মত্যাগের বিস্তীর্ণ পথে হেঁটেছি। নির্যাতন-নিগ্রহের দুস্তর বাধাকে অকুতোভয়ে অতিক্রম করেছি। সেই বাংলাকে প্রতিহিংসা, সাম্প্রদায়িকতা, অসহিষ্ণুতা এবং অবিশ্বাসীদের কবল থেকে তোমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।

১৬ ডিসেম্বরেই বিজয়ের মুহুর্তে প্রত্যাশার মানসিকতা নিয়ে আমাদের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বর বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো একটি সংবাদ ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পৌঁছাল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ করবে কিন্তু কোন অবস্থাতেই মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের নেতৃত্বের কাছে নয়। এদিকে জেনারেল ওসমানী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য মানসিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে রওনা হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। নিছক জেদের বশবর্তী হয়ে আহাম্মকের মতো এই সিদ্ধান্তটি পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ যে নিয়েছিল, সেটি ঐতিহাসিকভাবে তাদের ভুল সিদ্ধান্ত এবং বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠিতে তারা যে উন্মাদের পর্যায়ে ছিল, মূলত সেটিই প্রমাণ করেছে। এই সংবাদটি আমাদের কাছে বিস্ময় ও অসহনীয় যন্ত্রণার ছিল।আমি ব্যক্তিগতভাবে যশোরের মুক্তাঙ্গন থেকে ফিরে ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে এসে দেখলাম, কেমন যেন একটা বিমর্ষ ও থমথমে ভাব। একটা নীরব, নিথর, নিস্তব্ধ দমবন্ধ করা পরিবেশ সেখানে বিরাজ করছিল। অবস্থাটা যে স্বাভাবিক না, তা বুঝতে কষ্ট হল না। আমি সরাসরি তাজউদ্দীন ভাইয়ের কক্ষে চলে গেলাম। তিনি বিমর্ষ চিত্তে পাকিস্তানীদের হঠকারী সিদ্ধান্তটি আমাকে জানালেন। আমি খবরটি শুনে ভীষণভাবে মর্মাহত হলাম। তাজউদ্দীন ভাই খুব ধীরস্থির প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অনাপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাকে বললেন, ভালোয় ভালোয় আত্মসমর্পণটা হয়ে যাক। জেনারেল ওসমানী তো আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই দুঃখের। এই নিয়ে জেদ করার সুযোগ নেই। কারণ, তাহলে একটা ঘোরপ্যাঁচ লেগে যেতে পারে এবং আত্মসমর্পণ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। যৌবনের উত্তেজনা, আবেগ, উচ্ছ্বাস সবকিছুকে অবদমিত করে আমিও কোন রকমের প্রতিবাদ ছাড়াই ব্যথিতচিত্তে চেয়ারে বসে রইলাম। তাজউদ্দীন ভাই আমাকে বললেন, আপনার সঙ্গে জেনারেল ওসমানীর সুসম্পর্ক রয়েছে, আপনি তাঁর কক্ষে যান। ভদ্রলোক তো আবেগপ্রবণ ও একগুঁয়ে। ক্ষোভে-দুঃখে আবার সেনাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করে না বসেন। প্রধানমন্ত্রীর হাতে প্রতিরক্ষা দপ্তর ছিল বলে, একটু পান থেকে চুন খসলেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে গিয়ে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন। 

বাংলাদেশ গুজবের প্রসূতিকাগার। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জেনারেল ওসমানীর কাছে আত্মসমর্র্পণ করতে না চাওয়ার সিদ্ধান্তটি পাকিস্তানীদের আহাম্মকির চূড়ান্ত নিদর্শন ছিল। কেন যে তারা এরকম একটা বালখিল্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আজও আমাদের কাছে তার হিসাব মেলে না। কিন্তু পাকিস্তানীদের এই অপরিপক্ক, অদূরদর্শী ও বিদ্বেষমূলক সিদ্ধান্তটি এতবড় বিজয়ের মুহুর্তেও আমাদেরকে একটা অস্বস্থিকর পরিবেশের মুখে ঠেলে দেয়। দেশবাসীর মনে নানা রকম প্রশ্নের উদয় হয়। অনেকে ভেবেছিলেন, ভারত কৌশল করে জেনারেল ওসমানীকে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেয়নি। আমাদের অর্জন ও সাফল্যকে ইচ্ছে করেই ভারত খাটো করতে চেয়েছে। এই জীবন-সায়াহ্নে এসে এই বিতর্কের সুস্পষ্ট জবাব দেওয়া আমার নৈতিক দায়িত্ব। বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম যাতে সন্দেহের পরিমন্ডলে আদৌ অবরুদ্ধ না থাকে, সে কারণেই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ও প্রত্যয়দৃঢ় চিত্তে আমি বলতে চাই, জেনারেল ওসমানীর অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার  ও ভারত সরকারের কিছুই করার ছিল না। এ ব্যাপারে জেদ করতে গেলে হয়তো নতুন কোন বিপর্যয় সৃষ্টি হতো। ফলাফলটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো বলা যায় না। এখানে আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলেও এর প্রেক্ষাপট, পটভূমি ও পাদপীঠ রচনা করেছিল দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলন। ১৯৭০-এর নির্বাচনের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল নিয়ামক শক্তি। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৩১৩ আসনের মধ্যে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ছিল ১৬৯টি আসন। তার মধ্যে ১৬৭টি আসনে আমাদের বিজয় পৃথিবীর যে কোন দেশের মুক্তি আন্দোলনকারীদের কাছে ছিল একটি বিস্ময়কর ঘটনা। এই বিজয়ে আমরা আনন্দিত, উদ্বেলিত ও উচ্ছ্বসিত হয়েছিলাম বটে, কিন্তু আশ্চর্যান্বিত ও বিস্ময়াভিভূত হয়েছিলাম বললেও ভুল হবে না। নান্দাইলের নূরুল আমিন এবং ত্রিপুরার রাজা ত্রিদিব রায় ছাড়া মুসলিম লীগের আর সব রথী-মহারথীরা নির্বাচনের তোড়ে খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছিল। প্রসঙ্গটি না বাড়িয়ে আমি বলতে চাই, ওই নির্বাচনটি অনুষ্ঠানের পূর্বে সশস্ত্র বিপ্লবের উদগ্র বাসনায় যারা বুদ্ হয়েছিলেন, তাদেরকে কটাক্ষ না করেও বলা যায়, নির্বাচনের আগে সশস্ত্র বিপ্লবের ভ্রান্ত সিদ্ধান্তটি ‘মুজিব ভাই’ মেনে নিলে ১৬ ডিসেম্বরের প্রদীপ্ত সূর্য বাংলাদেশের পূর্ব দিগন্তে উদিত হতো কি না, আজও আমার সন্দেহ আছে। বাঙালির রাজনৈতিক সাফল্যের এই ম্যান্ডেটকে পাকিস্তানীরা অস্বীকার করার কারণেই বিশ্বজনমত ধীরে ধীরে আমাদের স্বাধীনতার সপক্ষে পাশে এসে দাঁড়ালো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অতীব বুদ্ধিমত্তা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার কূটনৈতিক সফর করে সমগ্র ইউরোপের সক্রিয় সমর্থন আদায় এবং আমেরিকাকে সেন্টো-সিয়েটো চুক্তি থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে সমর্থন প্রদান থেকে বিরত রাখার যে প্রতিশ্রুতি আদায় করেন, তাও ইন্দিরা গান্ধীর একটি অসাধারণ ও ঐতিহাসিক সাফল্য। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বান করে আমেরিকাকে ভেটো প্রদান থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতি আদায় কম সাফল্য ছিল না। বিষয়টি আমি  ডি পি ধরের (বাংলাদেশ বিষয়ে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তিনি ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ দূত ছিলেন) কাছ থেকে অবহিত হই। তিনি আমাকে এও জানান যে, ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিষয়টিকে আমেরিকা জাতিসংঘে উত্থাপন বা ভেটো দেওয়ার চেষ্টা করবে না। ডেটলাইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শ্রীমতি গান্ধী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ নেতৃবৃন্দকে কোলকাতার রাজভবনে ডেকে বিষয়টি বিস্তারিত অবহিত করেন। এখানে ছোট্ট করে বলে রাখলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না, মুজিব বাহিনীর আতঙ্কে তাজউদ্দীন ভাই আমাকে খুব কাছে টেনে নিয়েছিলেন। তাই সকল বিষয়েই তিনি আমাকে কাছে রাখতেন। ভারত সরকারের সাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি আমাকে সাথে রাখতে চেষ্টা করতেন; রাখতে না পারলে বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলো আমাকে সম্যক অবহিত তো করতেনই। ইন্দিরা ওই ব্রিফিংয়ে প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, তিনি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি স্বীকৃতি দেবেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, পরদিন কোলকাতার গড়ের মাঠে অনুষ্ঠিত সর্বকালের অন্যতম বৃহত্তম জনসভায় প্রায় একঘন্টার ভাষণে তিনি তাঁর ইউরোপ আমেরিকা সফরের বিশদ বর্ণনা দিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিষয়েও তাঁর সহানুভূতি ও সহমর্মিতার কথা স্মরণ করলেন। কিন্তু সরাসরি বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়ে টুঁ শব্দটি করলেন না ! মান্নান ভাই, ইউসুফ ভাই, সোহরাব ভাই, মোয়াজ্জেম ভাই ও আমি একসাথে বসে ভাষণ শুনছিলাম। স্বীকৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে কিছু উচ্চারণ না করায় আমরা একেবারেই মুষড়ে পড়েছিলাম। 

আল্লাহর অসীম করুণায় জনসভা সমাপ্ত হওয়ার পর ভগ্ন হৃদয়ে বিমর্ষ চিত্তে যখন থিয়েটার রোডে একটা ঘনঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে বসে ছিলাম, তখন হঠাৎ আকাশবাণী দিল্লী থেকে ঘোষণা শুনলাম, ভারতের প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। আবার আশা-নিরাশার দোলাচলে আমরা আবর্তিত হলাম। তবে হ্যাঁ, সেই গুরুগম্ভীর প্রত্যয়দৃঢ় বেতার ভাষণে তিনি প্রণিধানযোগ্য দু’টি বাক্য উচ্চারণ করলেন। ভারতের সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানী সৈন্যদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, আমরা যুদ্ধাক্রান্ত। আমি পাকিস্তান ভাঙতে চাইনি।

বাংলাদেশের অসহায় এক কোটি মানুষকে আমি যে আশ্রয় দিয়েছি, তাদেরকে জোর করে প্রত্যাবর্তন করিয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারি না। অন্যদিকে যে দামাল ছেলেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে বীরদর্পে লড়াই করছে, আমি তাদেরকে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে এবং বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে ভারত সরকারের স্বীকৃতি প্রদান করছি। 

পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করা স্বাধীনতার সূর্যকে আলিঙ্গন করতে যখন আমরা বাংলাদেশের মাটিতে পদার্পন করলাম, তখন মুক্তিপাগল মানুষের যে উচ্ছ্বসিত সম্বর্ধনা পেয়েছিলাম, তার তুলনা কোনকিছুর সাথেই হওয়ার নয়। 

লেখক : নূরে আলম সিদ্দিকী, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি 

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038650035858154