দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কারাগারে থাকা ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি বেইলি রোডের প্রধান শাখায় নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী মুরাদের হাজিরা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।
লালবাগ থানা-পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মুরাদ হোসেন গত ৮ এপ্রিল আদালত থেকে জামিন পান। তিনি সেদিনই মুক্ত হন। তিনি ১ মাস ১১ দিন কারাগারে ছিলেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বেশ কয়েক দিন তাঁকে প্রধান শাখায় দেখা গেছে।
অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী ( ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ‘জামিন পেয়ে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুরাদ। তিনি যেহেতু সাময়িক বরখাস্ত আছেন, তাই আজিমপুর বা অন্য কোনো শাখায় ক্লাস নিচ্ছেন না। তবে তাঁকে নিয়মিত হাজিরা দিতে বলেছি।’
ভিকারুননিসার আজিমপুর শাখার এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার মা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মুরাদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলা করেছিলেন।
পরদিন রাতে মুরাদ গ্রেপ্তার হন। মামলাটির তদন্ত করছেন লালবাগ থানার এসআই ফাইয়াজ হোসেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতিমধ্যে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। ঘটনার সময় ওই ছাত্রী সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত, এখন অষ্টম শ্রেণিতে।
ওই ছাত্রীর মা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এত বড় অপরাধ করে এত দ্রুত জামিন পাওয়া বিস্ময়কর। এতগুলো ছাত্রী অভিযোগ করল, তারপরও জামিন হলো কীভাবে? খবর শুনে আমার বাচ্চা আতঙ্কে আছে। স্কুলে যেতে চায় না, কোচিংয়ে যেতে চায় না।’ তিনি জানান, মুরাদ আবার আজিমপুরে কোচিং সেন্টারও চালু করার চেষ্টা করছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মুরাদের বিরুদ্ধে তিনজন ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করে। কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থীও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। সবার বক্তব্য রেকর্ড করে রাখা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। তবে তদন্ত শেষ করতে আরও সময় লাগবে। কারণ, আসামির জব্দ করা মোবাইল ফোনসহ ডিভাইসের ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।’
লালবাগ থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। ফরেনসিক প্রতিবেদন আসার পর দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।