রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) কলেজ পরিদর্শক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সব মিলিয়ে সাতটি পদ দখলে রয়েছে তাঁর। এবার তাঁর বিরুদ্ধে বিধি লঙ্ঘন করে ৬৯টি পরিদর্শন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে সম্মানী নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, তিনি এক বছরে সর্বোচ্চ চারটি পরিদর্শন কমিটির আহ্বায়ক হতে পারবেন, কিন্তু সেই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপাচার্যের (ভিসি) প্রশ্রয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক নানা অপকর্মের বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছেন। বলা হচ্ছে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ডা. জাওয়াদুল হকের কথা।
রামেবির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের এই শিক্ষক সম্প্রতি আরো দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। এই পরিচয়কে পুঁজি করেই তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (রামেবি) অনিয়ম-দুর্নীতির রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক মাসুম হাবিরের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে রামেবির সব কাজেই সর্বদা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামেবির একাধিক সূত্র জানায়, ভিসি অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তিনি অফিস করতে পারেন না। বাসা থেকে কোনোমতে কিছু ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করেন, কিন্তু দাপ্তরিক বিষয়ে ডা. জাওয়াদুল হক ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভিসির সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ নেই। তাই ডা. জাওয়াদুল হকের মাধ্যমেই দাপ্তরিক সব ফাইলপত্র ভিসির কাছে যাচ্ছে। এ সুযোগে ডা. জাওয়াদুল হক কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল-খুশিমতো দাপ্তরিক কাজকর্ম চালাচ্ছেন।
বিএমএ রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘রামেবির আটজন ডিনের কাউকেই ভিসি যোগ্য মনে করেন না। অজ্ঞাত কারণে ওই একজনকে দিয়ে ভিসি সব কাজ করান।’ তবে অভিযুক্ত অধ্যাপক ডা. জাওয়াদুল হক বলেন, ‘সাতটি পদের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি সঠিক নয়। ডিন আমার মূল পদ। বাকিগুলোর অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি।’
এ বিষয়ে মতামতের জন্য রামেবির ভিসি অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিবের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ‘অঘোষিত উপাচার্য’ শিরোনামে অধ্যাপক জাওয়াদুল হককে নিয়ে একটি অনুসন্ধানী খবর প্রকাশিত হয় একটি দৈনিকে।