নওগাঁর মান্দায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ৮ হাজার টাকায় ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতবরদের বিরুদ্ধে। তবে, বিষয়টি জানতে পেরে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম ওরফে শুটকাকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের বড় চকচম্পক গ্রামে অভিযুক্তের নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত আশরাফুল ওই গ্রামের সদর উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৬ জানুয়ারি সকালে দিকে মাছ ধরার কথা বলে খালের পাড়ের একটি সরিষার খেতে নিয়ে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে আশরাফুল। সম্পর্কে তিনি ওই শিশুটির দাদু হন।
শিশুটির মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার মেয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে এ পাশবিক নির্যাতন করেন আমার মামা শ্বশুর। পরে অসুস্থ মেয়েকে বাড়ি পৌঁছে দেন তার পরিবারের লোকজন। এসময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। রাতে বাড়ি ফিরলে তাকে ঘটনার বিষয়ে জানাই। স্থানীয়ভাবে মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।’
শিশুটির দাদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘নাতনিকে ধর্ষণের ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাতে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির নেতৃত্বে তার বাড়িতে সালিসের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে এলেঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন, স্থানীয় কামাল হোসেন, সৈয়দ আলী সরদার, দীনু কবিরাজ, আব্দুল জলিল, বাবুল হোসেন লেদু, জিন্নাতুন নেছাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সালিসে ধর্ষণের কথা স্বীকার করায় তাকে জুতা পেটা করেন মাতবরেরা। পরে শিশুটির চিকিৎসার জন্য আট হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’
সালিসের আয়োজক আনোয়ারা বিবি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘বিষয়টি নিজেদের মধ্যে হওয়ায় নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনা সালিসে নিষ্পত্তি করে দেয়া যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আমরা গ্রামের মানুষ আইন বিষয়ে এতকিছু জানিনা।’
এ ব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘প্রথমে এ ঘটনা আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সুকৌশলে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।