ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ আরও একটি সম্মানজনক বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। অসাধারণ উদ্ভাবনী পদক্ষেপের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি এবং আর্থিক অন্তর্ভূক্তি তরান্বিত করায় নগদকে ২০২১ সালের ‘সেরা উদ্ভাবনী ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস’ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য গ্লোবাল ইকনোমিকস লিমিটেড।
গত সপ্তাহে নগদকে এই সম্মাননা দেয়ার ঘোষণা দেয় আর্থিক প্রকাশনা ও দ্বি-বার্ষিক বিজনেস ম্যাগাজিন দ্য গ্লোবাল ইকনোমিকস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বৈশ্বিক আর্থিকখাতের বিভিন্ন শিল্পের ওপর গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাশীল বিষয়ে মতামত প্রদান করে থাকে।
ম্যাগাজিনটির পুরস্কার প্রদান নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের উদ্ভাবন এবং সমৃদ্ধির মূল দরজা হলো প্রযুক্তি। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সঙ্গে সম্পর্কিত ডিজিটাল রূপান্তরগুলোকে স্বীকৃতি দেয়া এবং সবার সামনে তুলে ধরার বিষয়টিকে গ্লোবাল ইকনোমিকস অ্যাওয়ার্ডস তাদের আলোচ্য সূচি হিসেবে নির্ধারণ করেছে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে যাত্রা শুরু করা ‘নগদ’ দেশীয় উদ্ভাবনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বৈশ্বিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। নগদের উদ্ভাবিত ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি যা বাংলাদেশে এই জাতীয় প্রথম উদ্ভাবন। এর মাধ্যমে ‘নগদ’ দেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে একটি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে দ্রুতবর্ধনশীল এমএফএস অপারেটরটি।
তাছাড়া নগদই বিশ্বে প্রথম মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস হিসেবে মোবাইল আপারেটরদের সহায়তায় মাত্র কয়েক সেকেন্ড অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে যে কোনো মোবাইল থেকে *১৬৭# ডায়াল করে চার ডিজিটের পিন সেট করার মাধ্যমে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলা যাচ্ছে। ফলে কাউকে কোনো জায়গায় যেতে হচ্ছে না বা কোথাও কোনো কাগজপত্র পাঠাতে হচ্ছে না। তাতে করে গ্রাহকের সময় এবং খরচ দুই-ই সাশ্রয় হচ্ছে।
সরকারি ভাতা ও আর্থিক সহায়তা বিতরণের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ‘নগদ’। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার ৭৫ শতাংশ স্বচ্ছতা ও সফলতার সঙ্গে বিতরণ করেছে ‘নগদ’। এসব কর্মকাণ্ড দেশ ও দেশের বাইরে সমানভাবে সমাদৃত হয়েছে।
দ্য গ্লোবাল ইকনোমিকস লিমিটেডের ঘোষণা বিষয়ে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, দেশের আর্থিক খাতের ডিজিটালাইজেশনের জন্য ‘নগদ’ শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। যদিও শুরুটা এত সহজ ছিল না। তারপরেও এ ধরনের স্বীকৃতি চলার কঠিন পথকে সহজ করে বহুদূর যাওয়ার পথরেখা তৈরি করে। যেকোনো ডিজিটাল কোম্পানির জন্য উদ্ভাবন জরুরি। নগদের গ্রাহকদের জন্য আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের সেরা সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করি। আমরা বিশ্বাস করি গ্রাহকেরা সেরাটাই পাওয়ার যোগ্য এবং সবসময় সেই দায়িত্ব আমরা পালন করি।
এর আগে বৈশ্বিক বিভিন্ন সংগঠনের একটি গ্রুপ ‘ইনক্লুসিভ ফিনটেক ফিফট’ গত বছরের অক্টোবরে নগদকে সে বছরের বিশ্ব সেরা ফিনটেক স্টার্টআপ হিসেবে নির্বাচন করে। দক্ষিণ এশিয়ার কোম্পানিগুলোর মধ্যে এই ধরনের স্বীকৃতি অনেকটাই বিরল।
একই বছর আইসিটি খাতের বিশ্বকাপ খ্যাত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (ডব্লিউসিআিইটি) সম্মেলনে ‘উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ পায় ‘নগদ’। দেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকে বেগবান করা বাংলাদেশি কোনো এমএফএস প্রথমবার এই পুরস্কার অর্জন করে। তারও আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অবদানের অংশ হিসেবে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় নগদকে পুরস্কৃত করে বাংলাদেশ সরকার।
বর্তমানে নগদের পাঁচ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক রয়েছে যারা প্রতিদিন গড়ে ৬৫০ কোটি টাকা লেনদেন করছে। সম্প্রতি ‘দেশি নগদে বেশি লাভ’ স্লোগানে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বাজারে চমৎকার সাড়া পেয়েছে, যেখানে মূলত ‘নগদ’ ব্যবহারে গ্রাহকের সার্বিক লাভের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।