বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মনোন্নয়ন কখনোই সম্ভব হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় বিদ্যমান আইন, বিধি ও শৃঙ্ক্ষলা যথাযথভাবে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নই ইউজিসির মূল লক্ষ্য।
শনিবার (২৮ আগস্ট) সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনার আওতায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ইউজিসি অডিটরিয়ামে এ চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রথম পর্যায়ে ২৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শনিবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগামীকাল রোববার (২৯ আগস্ট) বাকি ২১ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সুশাসন নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এপিএ প্রবর্তন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা যাবে এমন কার্যক্রমসমূহ এপিএতে অন্তর্ভুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও এপিএ ফোকাল পয়েণ্টদের আহ্বান জানান। তিনি সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, পরিকল্পনা যর্থার্থ না হলে তা নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা যায় না। ফলে বাস্তবায়নের সময় বাড়ে, সাথে ব্যয়ও বাড়ে। এত সরকারি অর্থের অপচয় হয়। যথাযথভাবে অর্থব্যয় হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য অডিট কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।
ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে ও একটি সুখী সমৃদ্ধিশালী দেশে গঠনে বর্তমান সরকার বিভিন্ন রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দেরমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন, ২০৪১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দেওয়া, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ডেল্টা প্ল্যান। এসব পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন অনেকাংশেই নির্ভর করছে বাংলাদেশের বিশবিদ্যালয়গুলোর কর্মদক্ষতার ওপর। গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন ও দক্ষ জনবল তৈরি করা না গেলে এসব পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
ইউজিসি সদস্য ও এপিএ টিমের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান। কমিশনের সচিব ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেজিস্ট্রাররা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইউজিসি সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও এপিএর ফোকাল পয়েন্ট মো. গোলাম দস্তগীর।
