প্রায় তিন বছর ধরে অচল করে রাখার পর প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর এবং সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন 'বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি'। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সমিতির নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিতর্কিত শাহেদুল-মাসুদা-আক্তারুজ্জামন গংদের বিরোধীতা ও হুমকি উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা শুক্রবার ঢাকা কলেজে জরুরি সাধারণ সভায় এসে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শুক্রবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির জরুরি সাধারণ সভা বিদায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের সভাপতিত্বে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলীর সঞ্চালনায় ঢাকা কলেজের শহীদ আ ন ম নজিব উদ্দিন খান র্খুরম অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা ভণ্ডুল করার জন্য গুলিবিদ্ধ শাহেদুল-তোফা-আক্তারুজ্জামান গং ফেসবুক-মোবাইল এসএমএসসহ নানা মাধ্যমে অপপ্রচার চালালেও সভায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষা ক্যাডারের সর্বস্তরের কর্মকর্তারা।
সভায়, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইমান আলীকে নির্বাচন কমিশনার ও রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবেদা সুলতানাকে সহকারী কমিশনার করে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত, কমিশন ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণে প্রয়োজনে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
আর সাংগঠনিক শূন্যতাপূরণ ও নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতার জন্য পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ও সমিতির প্রাক্তন মহাসচিব অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীরকে আহ্বায়ক ও ঢাকা কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদারকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলীকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আর ৩ সদস্য বিশিষ্ট নিরীক্ষা কমিটি গঠিত হয়।
সভায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির প্রাক্তন মহাসচিব অধ্যাপক মাসুমে রব্বানী খান, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ও সমিতির প্রাক্তন মহাসচিব অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর, সেকায়েপের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মহসিন কবীর, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক বেলা রানী সিংহ, বিপুল চন্দ্র সরকার, ফাতিহুল কাদির সম্রাট, তানভীর আলম, জিয়া আরেফিন আজাদ, নাসির উদ্দিন, তাজিব উদ্দিন, মুকিব মিয়া,কায়সুল বারী, আহমেদ জাফর সাদিক, শেখ নূর কুতুবুল আলম, শাহিনুল ইসলাম, এস এম কামাল আহমেদ, শওকত হোসেন, অলিউর রহমান, এনামুল হক, মুক্তার আহমেদসহ দেশের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন দপ্তর ও কলেজের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
বক্তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সমিতির নির্বাচন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতিকে কার্যকর করতে জরুরি সাধারণ সভা অপরিহার্য ছিল বলে মত প্রকাশ করেন। এছাড়া শিক্ষা ক্যাডারে পদ সৃষ্টি, পদ আপগ্রেডেশন, পদসোপান, পদোন্নতি, অর্জিত ছুটিসহ ক্যাডারের সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ জরুরি সাধারণ সভায় বক্তব্য দেন।
নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিতে জরুরি সাধারণ সভাটি ডেকেছেন সাবেক ৫ শিক্ষক নেতা। তারা হলেন, বিদায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সেলিমউল্লাহ খোন্দকার, সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক মাসুমে রাব্বানী খান ও অধ্যাপক অলিউল্লাহ আজমতগীর, স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, সদস্য সচিব সৈয়দ জাফর আলী। একজন শিক্ষক নেতা জানান, সভাটি আরও পরে ডাকার চিন্তা ছিল। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সমিতির নামে টাকা তোলা শুরু করেছেন।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন ২ বছরের জন্য সর্বশেষ সমিতির নির্বাচন হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুনে মেয়াদ শেষ হয়।