দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগেও এমপি হয়েছিলেন এবারও এমপি হয়েছেন এবং এবার নতুন খবর হচ্ছে তিনি দেশের মন্ত্রী হয়েছেন। এখনো বিসিবি সভাপতি পদেও আছেন পাপন। সভাপতি থাকাকালীন অবস্থায় তার সভাপতি পদ নিয়ে রীতিমতো টানাহেঁচড়া শুরু হয়ে গেছে। পাপন থাকবেন কি থাকবেন না, সেটা পরের ব্যপার। কিন্তু এ নিয়ে পাপনকে বারবার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বারবার একই কথা বলতে হচ্ছে। পাপন মুখে না বললেও তিনি যে ত্যক্ত-বিরক্ত সেটা অনুমান করা যায়। যারা এসব নিয়ে রাতের ঘুম হারাম করে ফেলছেন তাদের কাছে মনে হচ্ছে পাপন মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিসিবি সভাপতির পদ হারাবেন। বিষয়টা যে এমন না তা জল্পনাকল্পনাকারীরা বুঝতে পারছেন কি না, সেটা একটি প্রশ্ন।
কোনো কাউন্সিলরের ভোটে বিসিবি সভাপতি হননি তিনি। কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে বিসিবির পরিচালক নির্বাচন করেন। পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকরা ভোট দিয়ে সভাপতি নির্বাচন করবেন। ভোটাভুটির মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হবেন। একাধিক প্রার্থী হলেও সেটি করতে হবে এমনকি একজন প্রার্থী হলেও নির্বাচন করতে হবে, এটি সাধারণ নিয়ম। তবে পরিচালকরা যদি দেখেন সভাপতি পদে প্রার্থী একজনই এবং পরিচালকরা যদি মনে করেন তাকেই সভাপতি করবেন তাহলে সেক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া এড়িয়ে যাওয়া যায়। নাজমুল হাসান পাপন বিসিবির নির্বাচিত সভাপতি। এই মুহূর্তে অন্য কোনো ব্যক্তি চাইলেই বিসিবির সভাপতি পদে বসতে পারবেন না। আরো একটি সুযোগ হতে পারে, সেটি হচ্ছে যদি বর্তমান সভাপতি পদত্যাগ করেন, সে ক্ষেত্রেও পরিচালনা পর্ষদ থেকেই সভাপতি নির্বাচন করা হবে। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে। তবে পাপনের কথায় ইঙ্গিত আছে তিনি মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন।
জল্পনাকল্পনা হচ্ছে মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাপনও বিসিবির সভাপতির পদটাও ছেড়ে দেবেন। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর পাপন আগেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি বোর্ড সভাপতি থাকতে চান না। ছেড়ে দিতে চান। ছেড়ে দেওয়ার আগে ক্রিকেটের স্বার্থে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চান। যা কি না অনেকেরই পছন্দ হবে না। তবু তিনি ক্রিকেটের স্বার্থে সেটি করতে চান। পাপন কি ক্রিকেট বোর্ড ছেড়ে দেবেন ? চাইলেই তিনি যে সেটি করতে পারবেন না সে কথা নিজেই জানিয়েছেন কাল বঙ্গবন্ধু মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়। পাপন বলেন, ‘আমি চেষ্টা করব ছেড়ে দিতে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছেড়ে দেব।’ পাপন যোগ করেন, ‘এখানে আইসিসির কতগুলো নিয়মকানুন আছে। ইচ্ছা করলেই ছেড়ে দেওয়া যায় না। আইসিসির যে কমিটিগুলো আছে সেখানে আমি একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদেও রয়েছি। ওরা (আইসিসি) এটা চেঞ্জ করে না। ঐ দায়িত্বগুলো ওদের টার্ম শেষ হওয়ার আগে ছেড়ে দেওয়া যায় না।’
রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণীর অন্যতম দায়িত্ব পেয়েছেন পাপন, সেই দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি বিসিবি সভাপতির দায়িত্বের সঙ্গে এটির কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশেও ছিল আগে, বিদেশেও আছে। তিনি বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল এ বছরই আমার শেষ টার্ম। বিসিবিতে আমার টার্ম শেষ হবে আগামী বছর। আমি যদি ছেড়ে দেই আর এখন নতুন কেউ আইসিসিতে গেলে....।’ শ্রীলঙ্কায় এমন একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে পাপন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিষয়টা আইসিসি গ্রহণ করেনি।’
পাপন যদি আগামীতেও বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পান তাহলেও তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণে কোনো বাধা নেই। অতীতে এমন হয়েছে। একটা সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমানরা বোর্ড সভাপতি ছিলেন। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন পাপন। এবার চতুর্থ মেয়াদে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সভাপতি পদে আছেন তিনি। মোদ্দা কথা হচ্ছে সরকার যদি মনে করে পাপন বিসিবির সভাপতি পদে থাকবেন সেটা তার পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন।