বিয়ের দাবিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছেন এক কলেজছাত্রী। কচাকাটা ইউনিয়নে পুলিশ কনস্টেবল রাশেদের বাড়িতে গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন নীলফামারীর ডোমার থেকে আসা ওই ছাত্রী। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে দিয়ে ‘মেলামেশার’ পর পুলিশ সদস্য রাশেদ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা তাকে অবস্থান করতে দেন নি। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি।
বিয়ের দারিতে অবস্থান নেওয়া ওই ছাত্রী নীলফামারীর ডোমারের একটি কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ডোমার থানার একটি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রাশেদ নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের নায়কের হাট মন্ডলপাড়া গ্রামের কুশাই মিয়ার ছেলে।
ওই ছাত্রী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আমার উচ্চ মাধ্যমিক ফাইনাল পরীক্ষার সময় ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিল কনস্টেবল রাশেদ। পরীক্ষা সময়ে কেন্দ্রেই দুজনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক। সেই থেকে আমরা একসাথে চলা ফেরা এবং মেলামেশা করেছি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে আজ-কাল করে আমাকে ঘুরাতে থাকে। গত তিনমাস থেকে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। সে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছে। রাশেদের দেওয়া ঠিকানায় অনুসারে আমি তার বাড়িতে এসেছি। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাবো না।’
রাশেদের বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে জোর করে বাড়ির বাইরে বের করে দিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য ওই রাতেই কচাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মেয়েটিকে নিজ বাড়ীতে হেফাজতে নেন। তিনদিন মেয়েটি চেয়ারম্যানের বাড়িতেই রয়েছেন।
এ বিষয়ে রাশেদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি। রাশেদের কর্মস্থলসহ তথ্য চাইলে পরিবারের সদস্যরা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে এই বিষয়ে রাশেদের বড় ভাই ফরিদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘দীর্ঘদিন থেকে মেয়েটি জোড় করে রাশেদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। আমার ছোট ভাইয়ের সাথে তার কোন প্রেমের সম্পর্ক নেই। এছাড়াও গত দু'বছর আগে পারিবারিকভাবে রাশেদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটি রাশেদসহ আমাদের বিপদে ফেলতে আমাদের বাড়িতে চলে এসেছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মেয়েটি নিরাপত্তাহীনতায় থাকার কারণে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছি। মেয়ের পরিবাররের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজন আসলে দুইপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করা হবে।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।