বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে অন্তহীন বিড়ম্বনা - দৈনিকশিক্ষা

বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে অন্তহীন বিড়ম্বনা

স্বদেশ মন্ডল |

দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা যারা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, জুনিয়র কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়ে গৌরব বয়ে এনেছে। কিন্তু অন্তহীন ভোগান্তিতে এসব শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছর এসব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পেতে প্রথমে উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে কাগজপত্র পাঠান। এক পর্যায়ে তা ফেরত দিয়ে শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে বলা হয়। স্বাভাবিক নিয়মে জুন মাসে টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তা সাধারণ তহবিলে চেকের মাধ্যমে কালেকশন করে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে আগস্ট মাস শেষ হয়ে যায়। 

শুরু হল নতুন বছর। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ। ধারণা করা হয়েছিল ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ভোগান্তি নিশ্চয়ই কমবে। কিন্তু না। দফায় দফায় শুরু হলো বিড়ম্বনা। শিক্ষার্থীদের নিজন্ব ব্যাংক হিসাবে বৃত্তির টাকা পেতে সব শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব খোলা হলো। বেশ কিছু তথ্য সম্বলিত এক্সেল শিটে তাদের তথ্য পাঠানো হল। কিন্তু বাস্তব হলেও সত্য যে, এক্সেল শিটের সেই তথ্য সংশোধন এবং ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের নতুন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠানোর জন্য আবার নতুন করে আবিষ্কৃত হল অন্য নতুন লিংক।

কিন্তু মজার বিষয় হল এটি যে বা যারা আবিষ্কার করলেন তাদের মাথায় এ বিষয়ে কোন ধারনাই ছিল বলে মনে হয়নি। কেননা এই লিংকে প্রবেশ করে পাঁচ পাতার যে সব তথ্য সেখানে প্রবেশের অপশন ছিল তা নিছক বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়। পরে তা তিন পাতায় আনা হল এই তথ্য সম্বলিত কর্মযজ্ঞ। বহু কষ্টে মেইল পাঠিয়ে দেয়া হলো তথ্য।

এদিকে ২২ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আদেশে ৫ জুনের মধ্যে তথ্য পাঠানোর নির্দেশনা তাড়া শুরু করে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।

যখন তথ্য আপলোডের কাজ শুরু হল দেখা দিন নানা জটিলতা। কেউ পূর্ববর্তী বছর নির্ধারণ করতে পারছে না, কেউ ভাবছে যারা প্রাথমিক ও জুনিয়র উভয় বৃত্তি পেয়েছে তাদের তথ্য কি দুই বার আপলোড করতে হবে। আবার কেউ কেউ এর আগে এক্সেল শিটে প্রদত্ত তথ্য কোথায় পাবো এই নিয়ে মাথা খারাপ। তথ্য আপলোড দিলে কোথায় সেভ হচ্ছে তা দেখার কোন উপায় নেই। অ্যাডমিন প্যানেল দিন রাত পরিশ্রম করে কিছু কিছু অপশন ঠিক করলেও আজ পর্যন্ত প্রিন্ট অপশন নেই। ওদিকে মহাপরিচালক স্যারের চিঠিতে উল্লেখ আছে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য আপলোড করে প্রিন্ট কপিতে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর শেষে ৫ জুনের মধ্যে ই-মেইলে পাঠাত হবে। যখন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথ্য আপলোড করতে বসেন তখন নানবিধ সমস্যা মোকাবেলায় অ্যাডমিন প্যানেল ব্যস্ত থাকে এই সফটওয়্যার নিয়ে। সেজন্য তথ্য আপলোডে দেখা দেয় জটিলতা।

দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই বিড়ম্বনার অবসান চায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগ সত্যই প্রশংসনীয়। তবে হ্যাঁ, কাজ করার আগে আরও বেশি ভাবনার প্রয়োজন ছিল। কেননা যেখানে তথ্য আপলোড করতে হবে সেই লিংক প্রস্তুত না করেই তথ্য চাওয়া এবং আগের এক্সেল শিটে দেয়া তথ্য যদি বর্তমানে না-ই পাওয়া যাবে তবে তা সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তাও বা কতটা গ্রহণযোগ্য ছিল এ বিষয়ে অন্য কেউ তেমনভাবে না ভাবলেও এই দুর্ভাবনার বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট মেধাবী শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে কিছুটা হলেও দাগ কাটবে। নিশ্চয়ই অবিলম্বে এসব ভোগান্তির অবসান হবে।

লেখক : স্বদেশ মন্ডল, প্রধান শিক্ষক চীদপাই মেছেরশাহ্‌ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোংলা, বাগেরহাট।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035369396209717