করোনার থাবা পড়েছে নওগাঁ সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের ওপর। গত চার মাস ধরে ওই কলেজের ৮৬ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ তারা বেতন পাবেন, তা নিশ্চিত করতে পারছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, চার মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বাধ্য হয়েই তারা বকেয়া বেতনের দাবিতে রোববার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। নওগাঁ সরকারি কলেজ বেসরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে বকেয়া বেতনসহ ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী কর্মচারীরা জানান, নওগাঁ সরকারি কলেজে বিভিন্ন সময়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে (মাস্টার রোল) চাকরি পাওয়া কর্মচারীর সংখ্যা ৮৬ জন। প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও এতদিন জীবন চালানোর জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন-ভাতা দিয়ে আসছিল। কিন্তু চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না তারা।
নওগাঁ সরকারি কলেজ বেসরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমীন, কর্মচারী শিরিন আখতার, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া কর্মচারীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান শিউল ও সহসভাপতি রিয়াজ খান।
মানববন্ধনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিরিন আখতার নামের এক কর্মচারী। তিনি বলেন, ১৮ বছর ধরে এ কলেজে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করছি। আট বছর আগে স্বামী মারা গেলেও কলেজ থেকে পাওয়া বেতন দিয়ে সংসার চলত। কিন্তু চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাইনি। দুই ছেলে, এক মেয়েসহ চারজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। বেতন-ভাতা না পেয়ে ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছি। অনেক সময় ছেলেমেয়েদের মুখে খাবার দিতে পারি না। কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমীন বলেন, অধ্যক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য ফান্ড নেই। তাই বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মানিক কুমার সাহা বলেন, করোনার কারণে ছাত্রদের কাছ থেকে সব ধরনের ফি আদায় বন্ধ রয়েছে। এতে বেসরকারি এসব কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য যে ফান্ড রয়েছে, সেটি শূন্য হয়ে গেছে। ধৈর্যধারণ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন