অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে পরিচয় না দিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ড. কলিমউল্লাহকে বেরোবির সাবেক উপাচার্য উল্লেখ করে নোটিশে, উপাচার্য হিসেবে চার বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় উপাচার্য পদের কোনো কার্যক্রম না চালানো, ফাইলে স্বাক্ষর না করা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ না করাসহ সিন্ডিকেট ও বিভিন্ন সভা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
শনিবার (৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী (স্থায়ী বরখাস্ত) জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার রফিক হাসনাইন। ড. কলিমউল্লাহকে পাঠানো এই নোটিশের অনুলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সিন্ডিকেট সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালের ১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে বেরোবির ভিসি হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জনস্বার্থে জারিকৃত আদেশ অবিলম্বে নিয়োগপত্রের দিন থেকেই কার্যকর করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০২১ সালে ৩১ মে চার বছর পূর্ণ হয়েছে ড. কলিমউল্লাহর।’
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভিসি হিসেবে চার বছর পূর্ণ হলেও ড. কলিমউল্লাহ তা মানছেন না। এরপরও তিনি অনেক ফাইলে স্বাক্ষর করে চলেছেন। এমনকি কিছু ফাইলে স্বাক্ষর করা হয়েছে আগের তারিখ দেখিয়ে। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছেন বেরোবিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল, যা বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে নারী সেজে প্রেমের ফাঁদ, বেরোবির ৪ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
‘সাবেক ভিসি অধ্যপক ড. এ কে এম নূর-উন নবীকে ভিসি হিসেবে যেদিন নিয়োগ দেয়া হয়েছিল সেদিন থেকেই তার নিয়োগ আদেশ যোগদানের তারিখ কার্যকর হয়। আর সেভাবেই নিয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়ে আসছে’ বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
এতে আরও বলা হয়, ‘সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভিসি পদে চার বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ড. কলিমউল্লাহ জোর করে বেরোবির ভিসি পদে থেকে অবৈধভাবে বিভিন্ন ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করছেন, সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন যা বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. কলিমউল্লাহ এবং রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে বিগত ৩১ মে পর বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য কর্মকাণ্ডের কারণে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে উপাচার্যসহ তার অপকর্মের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ জুন ড. কলিমউল্লাহকে চার বছরের জন্য বেরোবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান ১৪ জুন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ মে উপাচার্য পদে চার বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে ড. কলিমউল্লাহর অনুসারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দাবি ড. কলিমউল্লাহ ২০১৭ সালের ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ায় তার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৩ জুন।
এদিকে কলিমউল্লাহ বিরোধী শিক্ষক-কর্মকর্তারা ১ জুন থেকে ‘কলিমউল্লাহ হটাও’ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামালকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।