বেসরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে আলাদা নীতিমালা তৈরি করে বদলি চালুর কথা বলা থাকলেও তা বাস্তবতার আলো দেখেনি। তাই বেসরকারি শিক্ষকরা বদলি হতে পারেন না। নিজ বাড়ি থেকে দূরে নিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘদিন থেকে যেতে বাধ্য হন। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির পৃথক নীতিমালা তৈরির সুপারিশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেছেন, বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি চালু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। তাতে এমপিও নীতিমালা অনুসারে পৃথক নীতিমালা তৈরির সুপারিশ করেছি।
শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া কোন সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি মন্ত্রণালয় দেখবে। এনটিআরসিএর কাজ নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া। বদলির বিষয়টি আমাদের আওতাভুক্ত নয়।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা না থাকলেও তারা এমপিওভুক্ত বা ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তাই শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বাড়ির কাছের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আবেদনের ধুম পড়ে। এভাবে তারা নতুন নিয়োগ পেয়ে নতুন প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ পান ঠিকই, কিন্তু তার পুরনো প্রতিষ্ঠানে আগের শিক্ষক পদটি শূন্য হয়ে যায়। ফলে সার্বিকভাবে শিক্ষক সংকট কাটে না।
এর আগে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে কয়েক হাজার ইনডেক্সধারী শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ছেড়ে আসা পদগুলো শূন্যই থেকে যায়। বর্তমানে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষক পদ শূন্য আছে। এসব পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য শূন্যপদের তথ্য অধিদপ্তরগুলো যাচাই বাছাই করছে।
এমন পরিস্থিতিতে চতুর্থ ধাপে শিক্ষক নিয়োগে এমপিওভুক্ত বা ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আলাদা প্রক্রিয়ায় নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টির অনুমোদন এখনও দেয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি থেকে আমরা ইনডেক্সধারীদের আলাদা প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সুপারিশ করতে চাই। তবে, সব নির্ভর করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ওপর। মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করবে এনটিআরসিএ।
উল্লেখ্য, নীতিমালা তৈরি করে বদলি চালু না হওয়ায় সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে নানাভাবে প্রতারণা করছেন নামধারী শিক্ষক নেতারা। কেউ মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কেউবা আবার কর্মকর্তাদের সঙ্গে লেনদেনের কথা বলে চাঁদা তুলছেন।