ভারতে যে গ্রামে ৭৫ বছরে প্রথম সরকারি চাকরি - দৈনিকশিক্ষা

ভারতে যে গ্রামে ৭৫ বছরে প্রথম সরকারি চাকরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভারতে বিহারের মুজফ্‌ফরপুর জেলার সোহাগপুরে ৭৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম রাকেশ কুমার নামের এক যুবকের সরকারি চাকরি হওয়ায় সেখানে বইছে খুশির জোয়ার।

ভারতে বিহার রাজ্যের মুজফ্‌ফরপুর জেলার ছোট্ট গ্রাম সোহাগপুর। গত ৭৫ বছরে এই গ্রামে কেউ কখনও সরকারি চাকরির মুখ দেখেননি। সেই খরা কাটিয়েই এবার প্রথম সরকারি চাকরি পেয়েছেন গ্রামের এক যুবক রাকেশ কুমার।

গ্রামে অন্তত ২ হাজার মানুষের বাস হলেও এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। কেউ সরকারি চাকরি পায়নি। ভারতের স্বাধীনতার পর ৭৫ বছরে প্রত্যন্ত এই গ্রামটিতে কেবল রাকেশরই সরকারি চাকরি হল ৷ ঘুচল অপবাদ। তাই সোহাগপুর গ্রামে এখন খুশির জোয়ার ৷

৩০ বছর বয়সী রাকেশ গ্রামেরই একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসাবে চাকরি পেয়েছেন। তারপরই তাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে গ্রামজুড়ে। রাকেশের চাকরির খবর আসা মাত্র সেখানে মিষ্টি বিতরণ, রঙ মাখামাখি শুরু হয়।

গত 8 সেপ্টেম্বরে রাকেশ নিয়োগপত্র পেয়েছেন ৷ খুব শিগগিরি মুজফফরপুরে বারকুরওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করবেন তিনি৷

গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন রাকেশ ৷ তারপর তিনি পাশের জেলা দ্বারভাঙায় যান স্নাতকোত্তর করতে ৷ এরপর রাজস্থান থেকে বিএডও করেন ৷ সম্প্রতি তিনি বিহারের ‘টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ এ উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে এই চাকরি পেলেন ৷

গ্রামের স্থানীয় এক নেতা দেবেন্দ্র চৌধুরি বলেছেন, সেই ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় থেকে সোহাগপুর গ্রামে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষ একটা স্থায়ী, ভাল বেতনের চাকরির জন্য আশা করে থেকেছে। কিন্তু সেটি করতে পারার পথ ছিল খুব কমই।

অনেক শিক্ষার্থীই কাছের অনেক বড় বড় নগরীতে পড়াশুনা করতে গেছে। কিন্তু কেউই এতদিন একটা সরকারি চাকরি হাসিল করতে পারেনি। “কুমারের সফলতা অবশেষে গ্রামের ওপর থেকে দুর্ভাগ্যের কাল ছায়া সরিয়ে দিয়েছে।”

“গ্রামের মানুষ এবার আশাবাদী, বাকি তরুণরাও রাকেশ কুমারের পথে হেঁটে সরকারি চাকরি পাবেন ৷ গ্রামের সম্মান বাড়বে”, বলেন দেবেন্দ্র।

ওদিকে চাকরি পাওয়ার আনন্দে রাকেশ বলেছেন, গ্রামের গর্ব হতে পেরে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত। তবে এই পথ যে মোটেও সহজ ছিল না সেকথাও খোলাসা করে বলেছেন রাকেশ।

রাকেশের বাবা ছিলেন একজন মুদি দোকানদার। বাবাকে ছোট বয়সেই হারিয়েছিলেন তিনি। এরপরের দীর্ঘ সংগ্রামের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে রাকেশ বলেন, তাকে ২০ মাইল সাইকেল চালিয়ে কাছের মুজাফফরপুরে হাইস্কুলে পড়তে যেতে হত।

পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য অবসর সময়ে গ্রামের শিশুদের পড়াতেও হত। এই উপার্জন দিয়েই বই কিনে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এই যুবক।

রাকেশ বলেন, “বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি সংগ্রাম করেছি। বাবা চাইতেন আমি চিকিৎসক কিংবা শিক্ষক হই। এখন আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করেছি।”

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038368701934814