ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ জাতীয় দিবস, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে গতকাল শনিবার কলেজে আলোচনা সভা, শপথ গ্রহণ, বৃক্ষরোপন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ স্মারক ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শেখ রাসেল দেয়ালিকায় দেয়াল পত্রিকা উন্মোচন, বৃক্ষরোপন করা হয়। এছাড়াও কলেজের স্বাধীনতা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সভার শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য এবং ছড়া,কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা, শিক্ষকদের ও অতিথিদের আলোচনা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারণ ও তাঁর সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বাধীনতার শপথ গ্রহণ করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিলো দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। এছাড়াও সন্ধ্যায় আলোকসজ্জার নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন সকলেই।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাসানটেক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ৩ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাজিম উদ্দীন খান, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আতিয়া খন্দকার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবর্ষ কমিটির আহ্বায়ক ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মোহন। অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কমিটির আহ্বায়ক এবং দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান রফিক।
বক্তারা বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আমাদের এবং এই প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ পালন করা খুবই সৌভাগ্যের বিষয় বলে গৌরব বোধ করছি। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। বসন্তের আজকের এই দিন বাঙালি জাতির জীবনে চিরস্মরণীয়, অনন্যসাধারণ একটি দিন। সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায় দিনটি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের সব মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলার মানুষের জনযুদ্ধ। গণমানুষের জনআকাঙ্ক্ষার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জনকে অর্থবহ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের মানবতাবিরোধী ভূমিকাকে যেন আমরা একটুও ভুলে না যাই। পাকিস্তানি হানাদারদের প্রেতাত্মারা আজো স্বাধীন বাংলাদেশে ছদ্মবেশে সক্রিয় দেশবিরোধী অপকর্মে, তাদেরকে চিহ্নিত করে সতর্ক থাকাটাও বিশেষ জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করি।