আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। প্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসে বেশকিছু গরু নিয়ে আসা হয়েছে। সেগুলো বিক্রির জন্য কলেজ ক্যাম্পাসেই রাখা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা কামরুন নাহার পাঁচ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে গরুর হাট স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। স্থানীয়রা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার রাতে দেখা গেছে, স্কুল গেটে ‘ফখরুদ্দীন এগ্রো’ ব্যানার টাঙিয়ে গরু বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির ১১ নম্বর গেইট, ৭ নম্বর গেইট, ৮ নম্বর গেইট, ৯ নম্বর গেইটে গরুর হাট বসানো হয়েছে। স্কুলের করিডোরে রাখা হয়েছে কিছু গরু। আর গেটের পাশের গাছে গরুগুলো বেঁধে রাখা হয়েছে। সেখানে পুরোদমে চলছে গরু বিক্রি। পরে কয়েকজন অভিভাবক এর প্রতিবাদ করলে রাতেই পুলিশ এসে গরুগুলো সরিয়ে দিয়েছে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ সুজন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের ৭১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ক্যাম্পাসে গরু বিক্রি। টাকার জন্য মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এত নিচে নামিয়ে দেবে তা ভাবতে পারিনি। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে আমরা স্বশরীরে ক্যাম্পাসে গিয়ে গরু বিক্রির প্রতিবাদ জানাই। তখন ফখরুদ্দীন এগ্রোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অধ্যক্ষকে ৫ লাখ টাকা দেয়ায় তিনি গরু বিক্রির অনুমতি নিয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা যারা নষ্ট করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটর এ গরুগুলো বিক্রির জন্য এনেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, তাৎক্ষণিকভাবে গরুর হাটটি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা কামরুন নাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ক্যাম্পাসে গরুর হাট বসানোর ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। এতে অধ্যক্ষ বলেছে, মেসার্স ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটর এর সাথে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদেরকে ভাড়া করা সেড ও স্থানের বুঝিয়ে দেয়ার চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়। তারা এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করেছেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন। মেসার্স ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটর বর্তমানে অবৈধভাবে ওই স্থান দখল করে আছেন। করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এবং প্রতিষ্ঠানের লোকজনের আনাগোনা কম থাকায় তাদের গরুর হাট বসানোর বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে আমার নজরে আসেনি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পরবর্তীতে গরুর হাট বসানোর বিষয়টি আমার নজরে আসার সাথে সাথে মেসার্স ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটর এর বর্তমান সত্ত্বাধিকারীদেরকে ডেকে এনে অবৈধভাবে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাৎক্ষণিকভাবে গরুর হাটটি সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মেসার্স ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটরের এ অবৈধ কার্যকলাপের জন্য তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে।
ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, একটি ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফখরুদ্দিন সন্স এন্ড ডেকোরেটর কর্তৃক ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজের ১১নং গেইটে গরুর হাট বসানোর সাথে এ প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে গরুর হাট বসানো অবৈধ ও অপরাধমূলক কাজ।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।