সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনাকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ হিসেবে দেখছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘আজকে শুনলাম ভিসির বাংলোতে পানি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিসির জন্য খাবার পাঠানো হয়েছিল সে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জেলখানার কয়েদিরাও খাবার পায়, পানি পায়। খাবার বন্ধ করে দেওয়া, ভিসির বাংলো কিংবা ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া বা কেটে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা এগুলো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না, এগুলো প্রতিহিংসামূলক।’
গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আমরণ অনশনের পরও উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তাকে পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখা হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শাবিপ্রবির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রায় সবার শরীরে জ্বর। এমন শারীরিক অবস্থার মধ্যেও এ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে অনড় তারা। এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ জন কয়েকজন অনশনকারী শিক্ষার্থী।
সোমবার শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকী অনশন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল শিক্ষার্থীও এদিন প্রতীকী অনশন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে গোটা শিক্ষাঙ্গন যখন উত্তাল, তখন তথ্যমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান এবং সন্তানের মতো। তাদের দাবিদাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল।আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাবো, রাজনৈতিক ক্রীড়ানক হিসেবে তাদেরকে যেন কেউ ব্যবহার না করে। আমি আশা করবো এর একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।’