ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন ও বিপিএড প্রশিক্ষন সনদে ৬ বছর শিক্ষকতার পর সানুরা আলিম মাদরাসার সহকারী শরীরচর্চা শিক্ষক মো: মাজাহারুল ইসলামের জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হয়। এরপর টানা ৫ দফা তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে ওই শিক্ষকের নেয়া বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরতের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে গত ২ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি সেই আদেশ। এনিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে।
অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অভিযুক্ত শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজ পদে বহাল থাকার পায়তারা করছেন। অবশ্য এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ২০১৩ খিস্টাব্দের ১ ডিসেম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন ও বিপিএড প্রশিক্ষন সনদ দেখিয়ে সহকারী শরীরচর্চা শিক্ষক পদে যোগদান করেন মো: মাজাহারুল ইসলাম। নিয়োগের দুই বছর পর জালিয়াতির অভিযোগ উঠলে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর মাদরাসা পরিচালনা কমিটির ৫ জন সদস্য ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি অভিযোগটি দ্বিতীয় দফায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্তেও প্রমাণিত হয়। এপরপর জেলা প্রশাসক নিজে তৃতীয় দফায় তদন্ত করে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মার্চ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে সুপারিশ করেন। চতুর্থ দফায় সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালক তদন্ত করে উত্তোলিত বেতন-ভাতা আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১০জুন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিবের কাছে সুপারিশ পাঠান। সর্বশেষ পঞ্চম দফায় ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত করে ওই শিক্ষক কর্তৃক গৃহীত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরতের নির্দেশ দেয়।
এবিষয়ে সানুরা আলিম মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: মোজাম্মেল হক বলেন, মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৭ মে ওই শিক্ষকের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এখন অভিযুক্ত শিক্ষক নানাভাবে পদে বহাল থাকার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সানুরা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: এমদাদুল হক বলেন, বেতন স্থগিতের পর অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁর নিয়োগের তারিখ পরিবর্তন করে দেখিয়ে আবেদন করেছিলেন। তদন্তে তার জালিয়াতি প্রমাণিত হয়েছে। এখন তিনি উচ্চ আদালতে মামলা করে কালক্ষেপনের চেষ্টা করছেন।
এবিষয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অডিট ও আইন শাখার সহকারী পরিচালক নাজনীন সুলতানা জানান, মন্ত্রনালয় থেকে ওই শিক্ষকের বেতন বন্ধের কোন চিঠি এখনো পাইনি। বরং সংশ্লিষ্ট আইন শাখা থেকে বেতন বন্ধের কারণ জানাতে চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বেতন বন্ধে মন্ত্রনালয়ের লিখিত আদেশ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।