ভুয়া সনদে সহকারী শিক্ষক পদে আট বছর! - দৈনিকশিক্ষা

ভুয়া সনদে সহকারী শিক্ষক পদে আট বছর!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অন্যের সনদে নিজের নাম বসিয়ে সহকারী শিক্ষক পদে আট বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হাসেম আলীর বিরুদ্ধে।  

তিনি ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

সম্প্রতি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) যাচাই-বাছাইয়ে এ অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, হাসেম আলীর আপন বড় ভাই মৃত সিরাজুল ইসলাম বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হওয়ার সুবাদে ২০১১ সালের ৯ জুন সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন হাসেম আলী। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর তিনি এমপিওভুক্ত হন। তারপর থেকে নিয়মিত স্কুলে পাঠদান করছেন।

এর পরে একাধিকবার বিদ্যালয়ে অডিট হলেও অদৃশ্য কারণে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যান জাল সনদে চাকরি করা হাসেম আলী।

এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর এটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৩৭.০৫.০০০০.০১০.০৫.০০২.২০ (১৯৬৭) নম্বর স্মারকে আপলোড করা সনদ যাচাই প্রতিবেদনে জানানো হয় যে মো. হাশেম আলী, পিতা- মো. মসলেম উদ্দিন, মাতা- মোছা. ইয়া খাতুন, রোল নম্বর- ৩২১২৪৯৫৮, রেজিস্ট্রিশন নম্বর- ১০০০০৪২৫৮০, বিগত ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ব্যাচের পরীক্ষায় প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে উত্তীর্ণ হিসেবে দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদটি জাল ও ভুয়া।

এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ যাচাইকালে প্রকৃত সনদধারী শামিমা নার্গিস, পিতা- মৃত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, মাতা- মাহমুদা বেগম শনাক্ত হন। এছাড়া শামিমা নার্গিস গণিত বিষয়ের নিবন্ধন সনদধারী বলেও এনটিআরসিএর প্রতিবেদন মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

এ ঘটনায় এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অনুলিপি পাঠায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক জানান, সনদ জাল কিংবা ভুয়া হলে এতদিন কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিল না কেন? নিয়োগ দেওয়ার সময় কমিটি তো উপজেলায় কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। আবার এমপিও দেওয়ার সময় বিষয়টি কেন ধরা পড়েনি? এসব টাকার জোরে হয়েছে। আর অডিটে এলে স্কুলের সব শিক্ষক ও কর্মচারীকে এক মাসের বেতন দিতে হয় অডিট অফিসারদের খুশি করতে। তাহলে কীভাবে ধরা পড়বে কার সনদ সঠিক, কারটা ভুল?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাতারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, হাসেম আলীর সনদ ভুল। অনলাইন নির্দেশনা পেয়েছি। তবে এনটিআরসিএর লিখিত নির্দেশনা না আসায় এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নওয়াব আলী জানান, জাল সনদ যেহেতু প্রমাণ হয়েছে, সে ক্ষেত্রে তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি শিক্ষকতা পেশাকে তুচ্ছ করে দেখেছেন। আমরা চাই, আইনগতভাবে তার শাস্তি হোক।

তিনি বলেন, যে শিক্ষক যোগদান করার সময়ই এমন জাল করে চাকরি নিতে পারেন, তার মতো শিক্ষকদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কি আশা করবেন? তার বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ ও অভিভাবকরা।
দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সর্দার আবু সালেক জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এনটিআরসিএ থেকে নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0094120502471924