ভোটের দিনে উৎসব - দৈনিকশিক্ষা

ভোটের দিনে উৎসব

জাকারিয়া মন্ডল |

সকাল সাড়ে সাতটাতেই ভোটের ক্যাম্প সরগরম। প্যান্ডেলে মুরুব্বি সমাবেশ। অনতি দূরে চেয়ার পেতে বসা কর্মীরা স্লিপ সাজিয়ে রেডি। রাজধানীর মিরপুরের আরামবাগ আবাসিকের ভেতরে সাজ সাজ রব। উৎসবের আমেজ। ভোটার আনতে ভলান্টিয়াররা সক্রিয়। ঢাকা-১৬ আসনে আরো ৫ প্রার্থী থাকলেও মাঠ পুরোপুরি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার কর্মীদের দখলে। তিনি গত কয়েক মেয়াদ ধরেই এ আসনের এমপি। এবারও তার জয়ে কোনো সংশয় নেই। তবুও তার কর্মীরা রিকশায় করে ভোটার আনছেন। কিছু রিকশা ভোটার আনার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত। এক রিকশায় তিনজন, চারজন করে ভোটার আসছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোটারদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে ইলিয়াস মোল্লার ছবি সম্বলিত স্লিপ। তারপর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা মোবাইলে ছবি তুলে রাখছেন। প্রত্যেক ভোটার স্লিপ মেলে ধরে হাসিমুখে দাঁড়াচ্ছেন। ক্লিক ক্লিপ ছবি উঠছে মোবাইলে। কে ভোট দিতে এলেন, আর কে এলেন না তার হিসাব রাখছেন কর্মীরা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়তে থাকলো। আরিফাবাদ হাউজিংয়ে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মাদরাসা কেন্দ্রে প্রথম দুঘণ্টায় ৮৩টি ভোট পড়েছিলো বলে জানালেন প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান খান। বেলা ১২টা নাগাদ ওই সংখ্যা হলো ১৮৩। কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লাইন নেই। কিন্তু, পাঁচটি বুথের সব কটিতেই ভোটার পাওয়া গেলো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বাড়ছে। ভোট দিতে এসে কেউ ফিরে যায়নি। 

অনতি দূরে মাদরাসা দারুল আবরার কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লাইনও পাওয়া গেলো। অধিকাংশই তরুণ। প্রিজাইডিং অফিসার মুহাম্মদ ফারুকুজ্জামানও জানালেন, এবারের ভোটে তরুণ ভোটারই বেশি। অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দিয়েছেন। তাদের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। ভোট হচ্ছে সুশৃঙ্খল। শান্তিপূর্ণ। কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এবার একজনের ভোট অন্যজনের দিয়ে দেয়ার কোনো ঘটনা নেই। আমরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট আশা করছি।  

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২, ৩, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে এই আসন। মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৫। যার মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৫  হাজার ৬৯২। নারী ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৪৪। এছাড়া ৯ জন হিজড়া ভোটারও আছেন। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে ওই কেন্দ্রের ভোটার কতোজন, কতোজন নারী, কতো জন পুরুষ লিখে চার্ট সাঁটানো। কোন বুথে কতো ভোটার লিখে রাখা আছে সেটাও। যেমন মাদরাসা দারুল আবার কেন্দ্রে ভোটার ২৫২১। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মাদরাসা কেন্দ্রে ২৫১১। সবাই পুরুষ। নারী ও পুরুষ ভোটারদের কেন্দ্র পৃথক করা হয়েছে। এই নির্বাচন আগের নির্বাচনগুলোর তুলনায় বেশ গোছালো। 

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিলে এবার ভোট হয়তো আরো উৎসবমুখর হতে পারতো। কিন্তু, ক্ষমতাসীন প্রার্থীর কর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।  

ঢাকা-১৬ আসনের অপর প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীক প্রার্থী আমানত হোসেন, ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট মনোনীত টেলিভিশন প্রতীক প্রার্থী সজীব কায়সার, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি মনোনীত একতারা পথিক প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত আম প্রতীক প্রার্থী তরিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রবিন।

একটি ভোট কেন্দ্রে চেয়ার পেতে বসে থাকা কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে একজনকে বলতে শোনা গেলো, রবিনরে দশটা ভোট দিলাম। কিভাবে এই ভোটগুলো দেয়া হলো, নৌকার কর্মী কেনো স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রবিনের ঈগল মার্কায় ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করছেন তা অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়নি। 

মিরগুর ১১ মেট্রোরেল স্টেশন থেকে রূপনগরগামী রাস্তাটা বাঁশ দিয়ে ঘিরে রেখেছেন নৌকা মার্কার কর্মীরা। মেট্রোতে ভিড় কম। মিরপুর ডিওএইচএস থেকে আগারগাঁও স্টেশনে এসে নেমে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন রুম্মান রানা। ডিওএইচএসে একটা বায়িং হাউজে চাকরি করেন। যাবেন মতিঝিল। রেলওয়ে কলোনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার ভোট। এতো দূর থেকে ভোট দিতে যাচ্ছেন? জবাবে সপ্রতিভ রুম্মান। বললেন, চাই না আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেনো দল ক্ষমতায় আসুক। এলে প্রতিশোধ নেবে। দেশের অবস্থা আরো খারাপ হবে। অনেকেই বললো, একটা ভোটে আর কি যায় আসে? কিন্তু, ভোট তো ভোটই। নাগরিক দায়িত্ব পালনের জন্য যাচ্ছি।    

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033309459686279