মাকে সেবার শর্তে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ দিলো হাইকোর্ট - দৈনিকশিক্ষা

মাকে সেবার শর্তে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ দিলো হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক |

একটি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি শরীয়তপুরের মতি মাতবরকে কারাগারে না পাঠিয়ে মাকে সেবা করার শর্তে নিজ বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে হাইকোর্ট। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তার অধীনে দেড় বছর নিজ বাড়িতে থেকে সংশোধনের সুযোগ পাবেন মতি।

রোববার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ এক রিভিশন মামলায় এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে প্রবেশনের সুযোগ চেয়ে করা আবেদন গ্রহণ করে আসামির রিভিশন খারিজ করেন আদালত। যেটি বিশেষ আইনে প্রথম রায় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

যে শর্তগুলো মানতে হবে, ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মায়ের যত্ন নিতে হবে। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে। আইন অনুসারে নির্ধারিত বয়সের আগে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেন না। এসব শর্ত না মানলে তাকে আবারও জেলে যেতে হবে। 

আদালতে আসামিপক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এনামুল হক মোল্লা শুনানি করেন।

রায়ের পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলার আসামি মতি মাতবরের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলার রায়ে আসামির সাজা বহাল রেখে প্রবেশন দিয়েছেন আদালত। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবেশন আইনে হাইকোর্টের দেয়া ২য় রায়। তবে বিশেষ আইনে এটি প্রথম রায়। যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং যুগান্তকারী।

আইনজীবীরা জানান, আসামি মতি মাতবরের কাছ থেকে ৪১১ এবং অপর একজন আসামির কাছ থেকে ৭০০টি ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ২৩ নভেম্বর ঢাকার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। এ মামলার বিচার শেষে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ৮ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হাকিম আদালত তাদের পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের পর একই সালের ১১ আপিল খারিজ করে দেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।

পরে আসামি মতি মাতবর ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন আবেদন করেন।

মতি মাতবর ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর গ্রেফতারের পর দীর্ঘ ২০ মাস কারাভোগ করেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৯ জুলাই হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন।

রিভিশনের শুনানিতে আসামিপক্ষ এ মামলায় প্রবেশন অধ্যাদেশ, ১৯৬০ এর ধারা ৫ অনুযায়ী আদেশ দেয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করে আইনজীবীরা জানান, যেহেতু তার এটিই প্রথম অপরাধ এবং আর কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো রেকর্ড নেই, তিনি ভবিষ্যতে কোনো অপরাধ করবেন মর্মে ধারণা করার মতো কোনো তথ্যও নেই। সে কারণে তিনি প্রবেশন আইনে সুযোগ পেতে পারেন।

এ আবেদনের শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর ১০ দিনের মধ্যে আসামির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং টিন নম্বর খুলে দিতে অপরাধী সংশোধন ও পূণর্বাসন সমিতি, ঢাকাকে নির্দেশ দেন। এ আদেশের আলোকে পদক্ষেপ নিয়ে ২১ অক্টোবর ঢাকা জেলার প্রবেশন অফিসার হাইকোর্টকে অবহিত করেন। পরে আদালত আসামির বিষয়ে আরও একটি (এন্টিসিডেন্ট রিপোর্ট) প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। এ আদেশ অনুসারে প্রবেশন কর্মকর্তা ২ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই প্রতিবেদনে আসামির স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করা হয়।

শিশির মনির আরও বলেন, `আদালত দেড় বছরের জন্য প্রবেশন মঞ্জুর করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আসামিকে তার পারিবারিক বন্ধন বজায় রাখতে হবে। মায়ের সেবা করতে হবে। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও দেখাশোনা নিশ্চিত করতে হবে। আইন অনুযায়ী বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দিতে পারবেন না।

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.007371187210083