নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে টাকা দাবি করছে একটি চক্র। তারা নতুন শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন থেকে তথ্য নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। মিথ্যে আশ্বাসে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা গেছে, পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নতুন শিক্ষক বা যাদের পদ নিয়ে জটিলতা থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না তাদের টার্গেট করে চক্রটি কাজ করছে। এতে নতুন শিক্ষকরা এনটিআরসিএর সুপারিশ নিয়ে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার পরও মিথ্যে আশ্বাসে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নতুন শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অপেক্ষাকৃত জটিলতায় থাকা প্রার্থীরা চক্রটির প্রধান টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। অসাধুচক্রটি যে শিক্ষা প্রশাসন থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে তা প্রার্থীরা নিজেরাও বুঝতে পারছেন। কারণ, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মুঠোফোনে কল করে প্রার্থীদের যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আর যোগাযোগ করলেই চাওয়া হচ্ছে টাকা। অনেক নতুন শিক্ষক টাকা দেয়ার পরিকল্পনা করলেও মুখ খুলছেন না। অনেকে প্রতারিত হওয়ার পর মুখ খুলছেন।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একটি মাদরাসায় সুপারিশ পাওয়া শিক্ষক হাবিবুর রহমান নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান দৈনিক আমাদের বার্তাকে। তিনি বলেন, পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব হয়ে সুপারিশ পেয়েছি। কিন্তু যোগদান করে এমপিও আবেদন করলেও ফাইল রিজেক্ট হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলাম। এরপর অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ফোন করে একটি নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে আমার কাছে টাকা চাওয়া হয়। অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, সহকারী প্রোগ্রামার হারুন অর রশিদ কথা বলছি। প্রোগ্রামারকে টাকা দিতে হবে।
ওই শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে কল রেকর্ড সরবরাহ করেন। তাতে শোনা যায়, একজন নিজেকে মেমিসের সহকারী প্রোগ্রামার দাবি করে টাকা দাবি করছেন। তিনি বলছেন, প্রোগ্রামারকে খুশি করতে টাকা দিতে হবে।
নম্বরটি ছিলো ০১৭৭৪৮৫৪৬০ । কিন্তু দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অপর একজন শিক্ষক জানান, তিনিও এ ধরনের একটি ফোন নম্বর থেকে ফোন কল পেয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী, ১৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। কিন্তু তারপর থেকে নম্বরটি বন্ধ পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মেমিসের সহকারী প্রোগ্রামার হারুন অর রশিদের সঙ্গে। তিনি ঘুষ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের নাম করে প্রার্থীদের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।