সিদ্ধিরগঞ্জে মাদ্রাসার ছাত্র হত্যার অভিযোগে কওমি মাদ্রাসার তিন শিক্ষক ও চার ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে রসুলবাগ মাঝিপাড়া রওজাতুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার নিহতের পিতা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করলে দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। নিহত ছাত্রের নাম সাব্বির আহম্মেদ (১৪)। সে রূপগঞ্জ থানার বরপা এলাকার মো. জামাল হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তাররা হলেন- মাদ্রাসার শিক্ষক শামীম, মাহমুদুল হাসান, আবু তালহা, মাদ্রাসার ছাত্র আবু বক্কর, শওকত হোসেন সুমন, জুবায়ের আহমেদ ও চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ভাটিরগাঁও গ্রামের মৃত তমসির মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ।
ওসি মশিউর রহমান জানান, সাব্বির ওই মাদ্রাসায় আবাসিকভাবে থেকে হিফজ বিভাগে পড়ত। ১০ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষক যুবায়ের জামাল হোসেনকে ফোনে জানান, ছাদে ওঠার সিড়ি সংলগ্ন ফাঁকা রডের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সাব্বির আত্মহত্যা করেছে। এ খবর পেয়ে নিহতের পিতা মাদ্রসায় গিয়ে ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে লাশ বাড়ি নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নেন। লাশের গোসল করানোর সময় ঠোঁট, কপাল ও মাথার ডানদিকে আঘাতের চিহ্নসহ গলায় রশির দাগ দেখা যায়। তখন সন্দেহ হয় হত্যাকে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। ফলে বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে মাদ্রাসা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হুজুর নিহতের পিতাকে ফোন দিয়ে ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
ভিকটিমের অভিভাবকরা নিশ্চিত হন এটা হত্যা। মাদ্রাসার শিক্ষক বা সহযোগীদের আঘাতে মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর জন্য লাশ গামছা দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে প্রচার করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে নিহতের পিতা জামাল হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে ঘটনা জানালে রাতে পুলিশ ওই সাতজনকে আটক করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টেরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মো. মশিউর রহমান বলেন, সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।