পটুয়াখালীর বাউফলে মিরাজ হোসেন নামে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মচারীর চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক মিরাজ হোসেন গুরুতর আহত হয়েছে। মিরাজ ঢাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে হাত কেটে মারা যাওয়া আলোচিত শিক্ষার্থী রাজীবের মামা।
জানা গেছে, স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে উপজেলার দাশপাড়া গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ঘটে এ ঘটনা। ওই রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মিরাজের আত্মীয়-স্বজনরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ এপ্রিল ঢাকার সার্ক ফোয়ার সামনে দুই বাসের রেষারেষিতে একটি হাত কাটা পড়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব হোসেনের। ১৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায় রাজিব। পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি বিবেচনায় অভিভাবক হিসেবে রাজিবের মামা জাহিদুল, খালা খাদিজা ও মিরাজসহ ওই পরিবারের ৭ জনকে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেয়া হয়। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে নিয়োগ পান মিরাজ হোসেন।
স্বজনরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবার লকডাউনে আলিফ (৭) নামে অসুস্থ ছেলেকে দেখতে গ্রামের বাড়ি আসেন মিরাজ। তার স্ত্রী নুপুর সন্তানকে নিয়ে মিরাজের শশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। পরে টেলিফোন করে স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে আসতে বলেন মিরাজ। কিন্তু স্ত্রী নুপুর হঠাৎ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন স্বামী মিরাজের কাছে। অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করলেই ফিরবেন বলে জানিয়ে দেয়া হয়। পরে, রাতে স্ত্রী-ছেলেকে আনতে শ্বশুরবাড়ী পৌঁছায় মিরাজ। তবে, ঘরে ঢুকেই জনৈক হাবিব নামে এক যুবকের সঙ্গে স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মিরাজ। এরপর বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মিরাজের চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এসময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশি কয়েকজন উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তপন কুমার বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, চোখের বিষয়টি স্পর্শকাতর। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাজিবের শ্বশুর সোহরাব হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘জামাইয়ের সাথে মেয়ের প্রায়ই ঝগড়া হতো। কিন্তু এরকম দুর্ঘটনা আশা করিনি।’
এ বিষয়ে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন বাউফল থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) আল মামুন।