রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নে পুড়াপুকুর এলাকায় ভুয়া কমিটি গঠন ও রেজুলেশন তৈরির করে মাদরাসা ও গোরস্থানের প্রায় দুই কোটি টাকার জমি গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ওই জমি রক্ষায় প্রয়োজনে জীবন দেওয়ার ঘোষণা দেন। এসময় পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাফ আলী মণ্ডল বিক্ষোভকারীদের তোপেরমুখে পড়েন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে জনরোষ থেকে বাঁচতে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন মাদরাসা সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আসলাম সরকার। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ও তার দুই সহযোগী মাসদুল এবং রবিউল মিলে জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন।
১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় আবু বক্কর সিদ্দিক মাদরাসা ও কবরস্থানের জন্য প্রায় ১০ বিঘা জমি দান করেন। নগরীর অদূরে দামি এ জমিটির ওপর সম্প্রতি ভূমিদস্যুদের নজর পরে। এরপর তারা গোপনে গোপনে মাদরাসার কমিটি করে ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে জমির একটি অংশ বিক্রি করে দেন। প্রায় ২ বিঘা জমি বিক্রি হয় ১ কোটির বেশি ৯৭ লাখ টাকায়। কিন্তু জমির মূল্য দেখানো হয় মাত্র ৫১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বাকি টাকা ওই চাক্রটি নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। যার অন্যতম হোতা হলেন মাদরাসার সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আসলাম সরকার। তাকে সহযোগিতা করেন মসদুল ও রবিউল নামের আরও দুইজন। রহমানিয়া কমপ্লেক্স নামে কেটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন যার মালিক হলেন আনোয়ার নামের এক ব্যক্তি।
তবে পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাফ আলী মণ্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এই অপকর্মের সঙ্গে আমি জড়িত নয়। মাদরাসার সভাপতি তার সহযোগীদের নিয়ে গোপনে জমিটি বিক্রি করেছেন। মাদরাসা ও কবরস্থানের জমি বিক্রি করার সঙ্গে আরও বড় বড় প্রভাবশালীরাও জড়িত।
মাদরাসার সাবেক সভাপতি আকরাম হাজি অভিযোগ করে বলেন, ‘আসলাম পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কথা বলেছিলেন মিটিংয়ে। কিন্তু আমরা রাজি হয়নি। তাকে সভাপতিও করা হয়নি। অথচ কিভাবে সভাপতি হয়ে আমাদের মাদরাসা ও কবরস্থানের জমি বিক্রি করে দিলো-তা জানা নেই। গোপনে সে মাদরাসা কমিটি করে নিজেই সভাপতি হয়ে ওই জমি বিক্রি করে দিয়েছে। কিন্তু আমার এই জমি দখল রাখতে প্রয়োজনে জীবন দেবো। কিন্তু জমি কাউকে দখল করতে দেবো না।’
এদিকে আসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান সোহরাব আলী মণ্ডল এবং কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল হকের কথা মতো ওই জায়গাটি বিক্রি করা হয়েছে। যারা কিনেছেন তারা নিজ অর্থায়নে মাদরাসাটি পরিচালনা করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।’