নিয়মিত অনুপস্থিত থেকেও এমপিও তোলার অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর জলঢাকায় এক মাদরাসা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত খালিশা খুটামারা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা ওয়াহিদ নাছরিন। তিনি ওই মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রুস্তম আলী স্ত্রী।
সভাপতির স্ত্রী হওয়ায় কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত এমপিও তুলছেন তিনি। তবে, তিনি পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্ত্রী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নারাজ মাদরাসার সুপার ও পরিচালনা কমিটি। এমনকি দীর্ঘদিন মাদরাসায় অনিয়মিত যাতায়াত করলেও ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা। অভিভাবকসহ এলাকাবাসী ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদরাসার একাধিক শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান,সহকারী শিক্ষক ওয়াহিদ নাছরিন মাদরাসায় নিয়মিত অনুপস্থিত থেকেও বেতনভাতা তোলেন। তিনি সভাপতির স্ত্রী হওয়ায় কেউ কিছু বলছে না। সব নিয়মনীতি আমাদের বেলায়, তিনি সভাপতির স্ত্রী বলে মাফ।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ওই মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, সব শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত সভাপতির স্ত্রী ওয়াহিদ নাছরিন। তার অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি অসুস্থ থাকায় দুই দিনের ছুটিতে আছেন। তবে শিক্ষক হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তা দেখতে দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ওয়াহিদ নাছরিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘদিন অনুপস্থিতের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই মাদরাসার সুপার আব্দুর রশিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান,‘ওয়াহিদ নাছরিনের বাসা রংপুরে। ফলে সেখান থেকে যাতায়াত করতে একটু সমস্যা হয়, তাই মাঝে মাঝে মাদরাসায় অনিয়মিত থাকেন।’
অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ওই মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রুস্তম আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী রংপুর থেকে নিয়মিতই যাতায়াত করে। যারা অভিযোগ করেছে তারা মিথ্যা বলেছে।
এসময় তিনি তার স্ত্রীর অনুপস্থিতের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে প্রতিবেদককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কিছু অভিভাবক আমার কাছে অভিযোগ করেছেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’