মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক নিয়োগ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চায় অধিদপ্তর - দৈনিকশিক্ষা

মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক নিয়োগ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চায় অধিদপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগে বেশকিছু দিন ধরে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন করা হচ্ছে না। অনেক প্রার্থী আবেদন করলেও নিয়োগ প্রত্যাশীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছেনা মাদরাসাগুলো। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশনায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, মাদরাসা প্রধান ও নিয়োগ প্রত্যাশীরা ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নে বারবার অধিদপ্তরে ধরণা দিচ্ছেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও এ নিয়োগের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ ফের শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে  এ নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চেয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমীন লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়েছেন। অধিদপ্তর থেকে বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খানের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুল কলেজের এমপিও নীতিমালায়  গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদের নাম বদলে তাদের শিক্ষক মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তাই মাদরাসায় কর্মরত গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক মর্যাদা দেয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। মাদরাসার গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক মর্যাদা দেয়া হলে তাদের নিয়োগ কিভাবে হবে সে বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছিল মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে। সে নীতিমালার খসড়া তৈরি করে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তারপর থেকে এ নিয়োগের জন্য প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে ভীর করছেন। তারা ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন নিয়ে মাদরাসায় এ পদগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে চাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে এ পদগুলোতে নিয়োগের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি মাদরাসার জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) তে এমপিওভূক্ত ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার স্টাফ প্যাটার্নে গ্রন্থাগারিক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার এবং দাখিল ও আলিম মাদরাসার স্টাফ প্যাটার্নে সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদ অন্তর্ভূক্ত আছে। এ পদগুলোতে নিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়া হয়। তবে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মৌখিক নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গ্রন্থাগারিক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থাগারিক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগের খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করে তা অনুমোদনের জন্য কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়। কিন্তু অদ্যাবধি ওই পদসমূহে নিয়োগে জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

চিঠিতে অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাদরাসা থেকে গ্রন্থাগারিক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগের জন্য মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়নপ্রাপ্তির আবেদন পাওয়া যায়। অনেকে ওই পদসমূহে নিয়োগের লক্ষ্যে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি অফিসে এসে প্রতিনিধি মনোনয়নপ্রাপ্তির অনুরোধ করেন। তাছাড়া একটি মাদরাসার গ্রন্থাগারিক পদে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন সংক্রান্ত আবেদনে ‘দ্রুত ব্যবস্থা নিন’ বলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা রয়েছে। 

তাই মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন বিষয়ে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের পরবর্তী নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। চিঠিটি মঙ্গলবার (২২ জুন) অধিদপ্তর থেকে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ পদে নিয়োগে বেশকিছু দিন ধরে বন্ধ থাকায় নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থীরাও তা শুরু করার দাবি জানিয়েছেন। 

নিয়োগ প্রত্যাশীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে জারি হওয়া মাদরাসার এমপিও নীতিমালা ও ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর জারি হওয়া মাদরাসার সংশোধিত জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে আমরা বিভিন্ন দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে বিভিন্ন পত্রিকার প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ব্যাংক ড্রাফট-পোস্টাল অর্ডারসহ আবেদন করেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অজ্ঞাত কারণে মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ আছে। এ কারণে আমাদের আবেদন করা অনেক মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি ও গভানিং বডির নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময়ও প্রায় শেষ হওয়ার পথে। আমরা ভুক্তভুগী। অথচ এর জন্য প্রার্থীরা দায়ী নন।  

তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, ‘চাকরির প্রত্যাশায় অনেক টাকা পয়সা খরচ করে নির্ধারিত বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতোকত্তরের পাশাপাশি আলাদাভাবে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা ও মাস্টার্স কোর্সে দেশের বিভিন্ন স্বীকৃত কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। ভর্তির পর থেকেই আমরা নানা কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। পরীক্ষা কার্যক্রমে দীর্ঘ সময়, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ অপেক্ষা ও সর্বশেষ করোনা মহামারির কারণে চাকরির প্রত্যাশায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেও যথাসময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় কার্যক্রম না হওয়াসহ নানা কারণে আমাদের অনেকেরই চাকরির বয়স অতিবাহিত হওয়ার পথে। সব দিক বিবেচনায় আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ। তাই, মাদরাসার গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রাখাতে দ্রুত ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন শুরুর দাবি জানান নিয়োগ প্রত্যাশীরা।    

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির আবেদন শুরু - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির আবেদন শুরু শিক্ষক বলেছিলেন ‘ইউ আর নট ফিট ফর ঢাবি’, সেই অথৈ সি ইউনিটে প্রথম - dainik shiksha শিক্ষক বলেছিলেন ‘ইউ আর নট ফিট ফর ঢাবি’, সেই অথৈ সি ইউনিটে প্রথম প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপেও জালিয়াতি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপেও জালিয়াতি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039088726043701