রংপুরের পীরগঞ্জে মাদরাসা সুপার মো. নুহু মিয়াকে মাদরাসার ভেতরেই ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্য মারপিট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের খোলাহাটি দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসায় ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, মাদরাসাটির সুপার মো. নুহু মিয়া প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার সকালে মাদরাসায় আসেন। তিনি আসার পর পরই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্য কাজী আপেল মিয়া ও সেলিম মিয়া সোয়া ১০টার দিকে মাদরাসার সুপারের কক্ষে ঢোকেন। এর পর তারা সুপারকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়ে মাদরাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলে।
এ নিয়ে উভয়পক্ষে তর্কাতর্কি শুরু হলে সুপারকে তারা মারপিট শুরু করে। ঘটনার পর আহত সুপার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, আমরা ভালোভাবেই মাদরাসায় পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটি কী কারণে, কখন সুপারকে বরখাস্ত করল জানি না।
আতঙ্কিত একাধিক শিক্ষার্থী এই ন্যক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবি করেছে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, মারপিট করা হয়নি। শুধু হাত দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে।
অপর সদস্য কাজী আপেল মিয়া বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নির্দেশে সুপারকে মাদরাসায় আসতে নিষেধ করছি। হাতাহাতি বা মারামারি হয়নি।
সুপার নুহু মিয়া বলেন, আমি ২২ বছর ধরে এই মাদরাসায় সুনামের সঙ্গে সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসলাম। আর এখন আমাকে অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অজুহাতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে শুনছি। অথচ আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা সাময়িক বরখাস্তের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। আমি নিয়মিতই মাদ্রাসায় দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে মারপিটের শিকার হলাম।
তিনি আরও বলেন, বরখাস্ত যদি করা হয়েই থাকে, সেটি আইন মোতাবেক চলবে। কিন্তু কেন মারপিট করা হলো। আমি সুস্থ হয়ে মামলা করব।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোনায়েম সরকার মানু বলেন, ১১ জানুয়ারি সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। তার পরও সে মাদরাসায় আসায় কমিটির সদস্যরা তাকে শুধু নিষেধ করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, ওই মাদরাসার সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত বিধি মোতাবেক হয়নি। তা ছাড়া তাকে মারপিট করা অন্যায় হয়েছে। সুপার আমার কাছে আসলে তাকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।