মামুনুলের বিরুদ্ধে ১৭ মামলা - দৈনিকশিক্ষা

মামুনুলের বিরুদ্ধে ১৭ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কেবল রাজধানীতেই অন্তত ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর হওয়া ১৫টি মামলায় তাঁর নাম রয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ। পল্টন থানায় হওয়া সর্বশেষ মামলার বাদী যুবলীগের এক নেতা। আর মোহাম্মদপুরে আরেকটি মামলার বাদী সাধারণ মানুষ।

ছবি : সংগৃহীত

মামুনুল হককে আজ রোববার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে বেলা একটায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ গ্রেপ্তার করে। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে ওই এলাকায় গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা এবং দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নেন। গ্রেপ্তারের পর মামুনুল হককে প্রথমে শ্যামলীতে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেখান থেকে বেলা দুইটায় নেওয়া হয় তেজগাঁও থানায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানেই আছেন।

আরও পড়ুন :

মামুনুলকে গ্রেফতার নিয়ে যা বললো পুলিশ

মামুনুল হককে যেভাবে গ্রেফতার করা হলো

মামুনুলের মুক্তি চায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুরে একটি ভাঙচুরের মামলায় মামুনুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা আছে মতিঝিল, পল্টন ও নারায়ণগঞ্জে। পরে সেসব সমন্বয় করা হবে। আগামীকাল সোমবার মামুনুলকে আদালতে তোলা হবে।

তেজগাঁও পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, ২০২০ সালের ৭ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় হওয়া মামলায় মামুনুল হক সাত নম্বর আসামি। মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণীতে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত লেখা আছে। মোহাম্মদপুরের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা জি এম আলমগীর শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। 

তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতাবদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি দেওয়া, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি ও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। সে সময় ১টি মুঠোফোন, ৭ হাজার টাকা, ২০০ ডলার এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ডেবিট কার্ড চুরি হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ডিএমপি সদর দপ্তরের একটি সূত্র বলেছে, ডিবির মতিঝিল বিভাগে তদন্তাধীন আটটি মামলা, লালবাগ বিভাগে তদন্তাধীন দুটি মামলা এবং তেজগাঁও বিভাগে তদন্তাধীন একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক। এ ছাড়া মতিঝিল থানায় তদন্তাধীন একটি এবং পল্টন থানায় তদন্তাধীন চারটি মামলায় তাঁর নাম রয়েছে। ১৬টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলাই হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর।

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয়েছে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল। গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধর্মভিত্তিক দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এই মামলা করেছেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) উপদপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ উজ জামান। মামুনুল হক এই মামলার এক নম্বর আসামি।
মামলার এজাহারে খন্দকার আরিফ উজ জামান বলেছেন, জুমার নামাজ শেষে তিনি কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ধর্মান্ধ ব্যক্তিকে মসজিদের ভেতর জুতা প্রদর্শন করতে দেখেন।  

এরপর মসজিদ থেকে বের হয়ে উত্তর গেটের সিঁড়িতে কয়েক হাজার জামাত-শিবির-বিএনপি-হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তির উচ্ছৃঙ্খল জমায়েত দেখেন। তাঁদের স্লোগান ও কথাবার্তা থেকে জানতে পারেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের নেতৃত্বে শীর্ষস্থানীয় জামাত-শিবির-বিএনপি-হেফাজত নেতারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশি–বিদেশি সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচি বানচাল করার ও ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন। এই জমায়েত থেকে জঙ্গিরা রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। মামুনুল হকের নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিজ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, গজারি লাঠি, শাবল ও রিভলবার, পাইপগানসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলা করেন তাঁরা।

খন্দকার আরিফ উজ জামান মামলায় বলেছেন, মামুনুল হকের হুকুমে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যেই অতর্কিতে তাঁর মাথায় বাড়ি মারেন। প্রাণ বাঁচাতে তিনি মাথা সরিয়ে নিলে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর নিচে বড় রড দিয়ে বাড়ি মেরে গুরুতর জখম (হাড় ভাঙা) করেন। এই আঘাতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকিম ও নাসির উদ্দিন মনির বাঁশের লাঠি দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064539909362793