প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওর টাকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’ ও ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের’ নেতারা। এজন্য অনলাইনে এমপিও বিল ব্যংকে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা অধিদপ্তরকে পরামর্শ দেন তাঁরা। একইসাথে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ চাঁদা কর্তন বন্ধের দাবিও জানিয়েছেন সমিতির শিক্ষক নেতারা।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বারাবর পৃথক আবেদন ও স্মারকলিপি দেন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’ ও ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের’ সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স।
মহাপরিচালককে দেয়া আবেদনে শিক্ষক নেতারা বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যথাসময়ে এমপিওর চেক ব্যাংকে পাঠানো হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো (জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও সোনলী) ব্যাংক এমপিওর কপি না পাওয়ার অজুহাতে বিভিন্নভাবে শিক্ষকদেরকে হয়রানি করে। বিশেষ করে খুব কম শিক্ষক-কর্মচারী ঈদের আগে উৎসব বোনাস তুলতে পারেন। বিশেষত ঢাকার বাহিরের বিভিন্ন জেলার শিক্ষক-কর্মচারীরা নির্ধারিত সময়ে বেতন তুলতে পারেন না। শিক্ষা অধিদপ্তরেরথেকে দেয়া বেতন তোলার শেষ তারিখের আগে কোন ব্যাংক টাকা দেয় না। এমন কি ‘এমপিও এখনো পায়নি’ কিংবা ‘ডাক এখনো পৌঁছেনি’ বলে তালবাহানাও করে ব্যাংকগুলো। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের দুঃখের সীমা থাকে না। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রথম উপহার বৈশাখী ভাতাও শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছর যথাসময়ে তুলতে পারেননি। এসব কারণে শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। এতে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
তাই আবেদনে, প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও বাবাদ প্রাপ্ত বেতনভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান শিক্ষক নেতারা। জটিলতা নিরসনে অনলাইনে এমপিও বিল ব্যংকে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা অধিদপ্তরকে পরামর্শ দেন তাঁরা। শিক্ষক নেতারা আবেদনে বলেন, অনলাইনে পদ্ধতিতে ব্যাংকে এমপিওর আদেশ এবং বেতনের চেক পাঠানো হলে শিক্ষক-কর্মচারীরা অতিদ্রুত তাদের বেতন তুলতে পারবেন। সেই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ‘এমপিওর বিশেষ লিংক’ চালু করার পরামর্শও দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। তাদের মতে, বিশেষ লিংক সেবা চালু হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অতিদ্রুত এমপিওর আদেশ ডাউনলোড করে দ্রুত বিল তৈরি করে ব্যাংকে জমা দিতে পারবে। এতে শিক্ষক সমাজ উপকৃত হবে এবং সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
এছাড়া শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ চাঁদা কর্তন বন্ধের দাবিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে স্মারকলিপিও দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। স্মারকলিপিতে শিক্ষক নেতারা, অতিরিক্ত কর্তন বন্ধ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব বোনাস ও বাড়ীভাঢ়া দেয়ার দাবি জানান।
মহাপরিচালককে আবেদন ও স্মারকলিপি দেয়ার সময় ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’ ও ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের’ সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্সসহ সমিতির অন্যান্য নেতারা উপস্থি ছিলেন।