মেহেদীর রং এখনো মুছে যায়নি। সংসার সাজানোর আগে নববধূ সীমা আক্তারের ইচ্ছা ছিল লেখাপড়াটা শেষ করার। মাস্টার্সে লেখাপড়া করার। কিন্তু সাইফুল আলম স্ত্রীর মাস্টার্স পর্বে লেখাপড়ায় রাজি হননি। এ নিয়ে অভিমান করে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সীমা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার দরগা গেইট এলাকার তাজপুর গ্রামে। সীমার এই অকালমৃত্যু নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এমন কথা বললেও বাবার বাড়ির লোকজন বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, যৌতুকের জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছেন সাইফুল ও তাঁর পরিবারের লোকজন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সীমার দুই ননদকে আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই মাস আগে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের আব্দুস শহীদের মেয়ে সীমা আক্তারের বিয়ে হয় একই উপজেলার ভাদৈ গ্রামের সাইফুল আলমের সঙ্গে। সাইফুল মাধবপুরে অবস্থিত স্টার সিরামিক কম্পানিতে চাকরি করেন। সেই সুবাদে কম্পানির পাশেই তাজপুর গ্রামে নানা বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। গত শুক্রবার রাতে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকলেও ভেতরে কারো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়। পরে মাধবুপর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্টিলের দরজা ভাঙতে না পেরে বাথরুমের দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সীমার লাশ উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পর সাইফুলের দুই বোন হবিগঞ্জ শহর থেকে ওই বাড়িতে গেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাঁদের আটক করে।
গতকাল শনিবার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সীমার বাবা আব্দুস শহীদ অভিযোগ করেন, বিয়ের সময় সাইফুলকে মোটরসাইকেলসহ প্রচুর জিনিসপত্র দিলেও তিনি সীমাকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। যৌতুক না পেয়ে সীমাকে হত্যা করে তাঁর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সীমার বাবা হত্যা মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।