মিডিয়া কি আনভীরকে প্রশ্ন করতে পারে না : মুনিয়ার বোন - দৈনিকশিক্ষা

মিডিয়া কি আনভীরকে প্রশ্ন করতে পারে না : মুনিয়ার বোন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ। এটি হত্যা বলে দাবি করেছেন তার ভগ্নিপতি। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি মামলাও হয়েছে। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে শুরুর দিকে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টাও করেনি গণমাধ্যম।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। তিনি বলেছেন, ‘মিডিয়া আনভীরকে কি প্রশ্ন করতে পারে না? তাকে প্রশ্ন করার কারোর সাহস নেই? কী করেছে সে?’ একটি গণমাধ্যমের লাইভে অংশ নিয়ে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি।

নুসরাত জাহান বলেন, ‘সোমবার সকালে শেষবার কথা হয় মিনিয়ার সঙ্গে। ওর কান্নায় ঘুম ভাঙে। বলে, আনভীর আমাকে ধোকা দিয়েছে। আমি অনেক বিপদে আছি। তুমি ঢাকায় আসো। আমি তাকে বলেছি, তুমি থাকো, তোমাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসব। সে পরে বলে যে, আমি তোমার সঙ্গে অনেক অভিমান করে চলে আসছি। আনভীরের সঙ্গে যখন গেছে তখন অনেক বকাঝকা করছি, জিদ করে কথা বলিনি। তার অভিমান, সে আমার কাছে কীভাবে আসবে, লজ্জা কাজ করছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমি তাকে পরে বোঝালে সে বলে ঠিক আছে আসো। পরে ১১টার দিকে আবার ফোন দিয়ে বলে, আমার অনেক বিপদ তুমি বুঝতেছ না কেন? যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমার গাড়ি ঠিক করতে করতে দেরি হয়ে যায়। পৌঁছতে ৪টা ১৫ হয়ে যায়। গিয়ে দেখি বাসায় দরজার কলিংবেল নষ্ট হয়ে গেছে। ইন্টারকম থেকে ফোন দিলেও ধরেনি।’

মুনিয়ার বোন বলেন, ‘পরে তালা ভাঙার জন্য মানুষ ডাকা হয়। তখন অনেক শব্দ হলেও ভেতর থেকে বোন সাড়া পাচ্ছিলাম না। তখন আমরা ভয় পাচ্ছিলাম। তালা ভাঙার পর বাইরে থেকেই দেখি ও রুমের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশ পরে এসে আমাকে নিয়ে যায়। পরে গিয়ে দেখি ঝুলন্ত অবস্থায় সে। বিছানায় পা বাকা অবস্থায় ছিল। বিছানাও পরিপাটি ছিল। সে যদি শুয়ে থাকতো বা বিছানায় দাঁড়াতো তাহলে তো সিম্পটম থাকতো।’

তিনি আরো বলেন, ‘পায়ের কাছে একটা সিট ছিল। সেটিও পড়ে যায়নি। এ অবস্থায় তাকে দেখতে পাই। পরে পুলিশসহ অন্যরা ওড়না কেটে তাকে নীচে নামায়। ওর সঙ্গে ১১টার দিক সর্বশেষ কথা হয়। আমি ইতোমধ্যে জানতাম, আনভীর অনেক রাফ বিহাব করেছে।’

নুসরাত বলেন, ‘আমি জানার পর নিশ্চয়ই বোনকে বিপদে ফেলে দেব না। দুইমাস আগে সে যখন আনভীরের সঙ্গে, তাকে ফুঁসলিয়েছে জানি না, সে আর মানেনি। আমার সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়েছে। আমি তার সঙ্গে চার পাঁচদিন কথাও বলিনি। সে ঢাকায় যাবে, সে বাসা নেবে। পরীক্ষাও দেবে। আনভীরকে বিয়ে করবে। সে বলেছে, আপু এটা কাউকে বলা যাবে না, আনভীর নিষেধ করেছে। আমি বলেছি, আমি রাজি না। এটা হয় না। তখন সে বলেছে, আনভীর বলেছে এটা কিছুদিন গোপন রাখতে হবে। বিয়ের পর বাইরে নিয়ে গিয়ে আমাকে সেটেল করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি পারিনি। আমি তাকে যথেষ্ট বুঝিয়েছি। সে আনভীরকে অনেক ভালোবাসতো। আনভীরের ভালোবাসার অভিনয় ছিল হয়তো। ডায়েরিতে লিখেছে। সবকিছুর প্রমাণ ছিল বাসায়। ওই বাসায় সে প্রতিনিয়ত যেত। ছবি ছিল, অগনিত ‘এ’। ছবিতে ‘এ’, হাতে ‘এ’। মোবাইলেও অনেক কিছু আছে।’ তিনি এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে তার বিচারও দাবি করেন।

এর আগে মুনিয়ার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার শ্যালিকা আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুইদিন আগেও তার সাথে আমার কথা হয়েছে। তখন মুনিয়ার মধ্যে আত্মহত্যার মতো কোনো মোটিভেশন ছিল না। আমাদের মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ফরেনসিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি।’

মঙ্গলবার বাদ আসর কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। সোমবার গুলশান-২ এর ১২০ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর আসামী করে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। মুনিয়া মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063040256500244