মুনিয়ার মৃত্যু : আগাম জামিন চাইলেন বসুন্ধরার এমডি - দৈনিকশিক্ষা

মুনিয়ার মৃত্যু : আগাম জামিন চাইলেন বসুন্ধরার এমডি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ‘ধর্ষণ ও হত্যার’ অভিযোগে তার বোনের দায়ের করা মামলায় হাই কোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাই কোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় আবেদনটি ১৪২৪ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। কার্যতালিকা অনুযায়ী ২৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।

মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া এর আগে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ মামলা করেছিলেন বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর ‘ধর্ষণ ও হত্যার’ অভিযোগ এনে আনভীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করেন তানিয়া।

ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মাফরুজা পারভীন গত ৬ সেপ্টেম্বর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

বসুন্ধরার এমডি আনভীরের পাশাপাশি তার বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা এবং শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার গুলশানের এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।ঢাকার গুলশানের এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।গত ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেছিলেন ওই তরুণীর বোন তানিয়া।

সেখানে বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।

সেই অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কখনো কথা বলেননি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। মুনিয়ার মৃত্যুর সঙ্গে তার কোনো ‘সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি’ জানিয়ে গত ১৯ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।

পুলিশের ওই প্রতিবেদনে অনাস্থা (নারাজি) জানিয়ে মুনিয়ার বোন তানিয়া অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছিলেন।

তা খারিজ করে ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী গত ১৮ অগাস্ট চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সায়েম সোবহান আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

বাদীর অন্যতম আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন সেদিন বলেছিলেন, এ অব্যাহতি আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তারা। তবে পরে আদালতে নতুন মামলাটি করেন মুনিয়ার বোন।

মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকেন। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।

মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ, যার মধ্যে ছয়টি ডায়েরি ছিল। সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

তবে তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে মুনিয়ার ‘আত্মহত্যায়’ আনভীরের ‘সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার’ কথা বলা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, আসামি আনভীর ২০১৯ সালের জুন মাসে বনানীতে ‘৬৫ হাজার টাকায়’ একটি বাসা ভাড়া নেন এবং ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ মুনিয়াকে নিয়ে সেখানে ওঠেন।

“আনভীর ৭/৮ ধরে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে আনভীরের মা,বাবা ও মডেল পিয়াসা  তাদের বাসায় মুনিয়াকে ডেকে নিয়ে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলে এবং তা না করলে হত্যার হুমকি দেয়।”

এরপর মুনিয়া কুমিল্লায় বাবার বাড়িতে চলে যান। কিন্তু পরে চলতি বছরের মার্চে মুনিয়াকে ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ আবারও ঢাকায় নিয়ে আসেন আসামি এবং গুলশানের ওই বাসায় তাকে রাখেন বলে আর্জিতে লিখেছেন তানিয়া।

“মুনিয়া ২/৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। বিষয়টি আনভীরকে জানিয়ে সে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। বিষয়টি এ মামলার অপর আসামিদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা পারিবারিক সুনাম, সুখ্যাতি রক্ষায় মুনিয়াকে হত্যার হুমকি দেয়।”

আরজিতে বলা হয়, “২০২১  সালের ২৬ এপ্রিল সকাল ৯টায় মুনিয়া তার বোনকে (মামলার বাদী) ফোনে বলে, ‘আপু আমার বিপদ, আনভীর আমাকে ধোঁকা দিয়েছে।  সে আমাকে বিয়ে করবে না, ভোগ করেছে মাত্র। তুমি তাড়াতাড়ি এসো, আমার বড় দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পার।”

এরপর তানিয়া কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে ওই ভবনের ম্যনেজারের সাহায্যে তালা ভেঙে বাসায় ঢুকে মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ পান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050010681152344