নাটোরের লালপুর উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের জোতদৈবকী গ্রামের বাসিন্দা দিপেন্দ্র নাথ সাহা (৫২)। তিনি লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক। আজ রোববার ইউপি নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে তিনি দেখেন মৃতের তালিকায় তাঁর নাম। মৃত ব্যক্তি হিসেবে ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ পড়ায় তিনি ভোট দিতে পারেননি।
এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে দিপেন্দ্র নাথ সাহা বলেন, তিনি নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা অনুসারে দ্বিতীয়বারের মতো মারা গেছেন। তাই ভোট দিতে পারেননি। সেই সঙ্গে প্রশ্নও তুলেছেন, তিনি আর কতবার মারা যাবেন?
স্কুলশিক্ষক দিপেন্দ্র নাথ সাহা বলেন, জীবনে অনেকবার ভোট দিয়েছেন তিনি। শিক্ষক হিসেবে ভোট গ্রহণের দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০১৫ সালে হঠাৎ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে জানতে পারেন, নির্বাচন কমিশনের কাগজপত্রে মৃত ব্যক্তির তালিকায় তাঁর নাম। ফলে কেন্দ্র থেকে ফিরে এসে লালপুর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা সংশোধনের লিখিত আবেদন করেন। দীর্ঘ তিন বছর নির্বাচন অফিসে ঘোরাঘুরি করে ২০১৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে মৃত থেকে জীবিত হন। নির্বাচন কার্যালয় থেকে আশ্বস্ত করা হয়, ভোটার তালিকা সংশোধন হয়ে যাবে এবং তিনি ভোটও দিতে পারবেন। কিন্তু আজ আবার ভোট দিতে গিয়ে দেখেন, মৃতের তালিকাতেই তাঁর নাম পড়ে আছে। ফলে আজও ভোট দিতে পারেননি।
ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আলাপকালে দিপেন্দ্র নাথ সাহার বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে নির্বাচন কমিশন আমাকে কাগজে–কলমে মৃত উল্লেখ করে। এতে আমার বেতন-ভাতা উত্তোলনে ও পাসপোর্ট ইস্যুতে জটিলতা তৈরি হয়। আমি সংশোধনের আবেদন করি। দিনের পর দিন ঘুরতে থাকি। তিন বছরের মাথায় নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করা হয়। কিন্তু ভোটার তালিকায় আবার আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এভাবে আমি আর কতবার মারা যাব?’
লালপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাসিব বিন সাহাব বলেন, সার্ভারে এনআইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভোটার তালিকা কেন সংশোধন হলো না, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। ভোটার তালিকা হালনাগাদ তিনিই করেছেন, তাহলে এর দায় তাঁর কি না জানতে চাইলে এই নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভোটের পর আমি খোঁজ নিয়ে এর কারণ জানার চেষ্টা করব। কথা দিচ্ছি, এবার আমি ভোটার তালিকা খুব শিগগিরই ঠিক করে দেব।’