সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ডিমলার অস্বচ্ছল পরিবারের ছেলে ভূপেন্দ্র অধিকারীর। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ২৯২১ তম হয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৭০ নম্বর পেয়েছেন ভুপেন্দ্র। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেল পড়ার সুযোগ পেলেও আর্থিক দুশ্চিন্তাই তাকে ঘিরে ধরেছে।
ভূপেন্দ্র অধিকারী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের মতিলাল অধিকারী ও বাসন্তী অধিকারী দম্পতির সাত সন্তানের মধ্যে (৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে) পঞ্চম।
ভূপেন্দ্রর বাবা একজন বাদাম বিক্রেতা এবং মা একজন গৃহিণী। এতদিন বাদাম বিক্রি করেই তিনি ভূপেন্দ্রর পড়াশোনার খরচ চালিয়েছিলেন। এখন বয়সের ভারে বাদামের ব্যবসা করার মতো সামর্থও তার আর নেই।
ভূপেন্দ্র অধিকারী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তিন ভাই ও চার বোন মিলে আমরা মোট সাত ভাইবোন। ভাইদের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট এবং বড় ভাইয়েরা বিবাহিত ও অশিক্ষিত। তারা তাদের পরিবার নিয়ে নিজেরাই হিমসিম খাচ্ছে। প্রায় ঢাকা-বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে রিকশা চালাতে যায়। অন্যদিকে বোনদের মধ্যে তিন বোনের বিয়ে হয়েছে।অর্থাভাবে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
ভূপেন্দ্রর বাবা মতিলাল অধিকারী দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ছেলেটাকে ঠিকভাবে লেখাপড়া খরচ দিতে পারেনি। তারপরও সে নিজের ইচ্ছেশক্তিতে ও আগ্রহে কঠিন পরিশ্রম করে লেখাপড়া চালিয়েছে। এখন ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে অনেক টাকা-পয়সা লাগবে। আমার সহায়-সম্পত্তি নেই, এত টাকা কিভাবে জোগাড় করবো তা ভেবে কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছি না।এসময় তিনি ছেলের মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়া চালিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তশালীদের কাছে আর্থিক সহায়তা কামনা করেন।
ডালিয়া চাপানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভূপেন্দ্র ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভীষণ আগ্রহী। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সে ডালিয়া চাপানী উচ্চ বিদ্যালয়় থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি উর্ত্তীণ হন। এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। সে মেডিকেল এ পড়ার সুযোগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত।
তিনি আরও জানান, প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবানরা নজর দিলে ভূপেন্দ্রর ডাক্তারি পড়া আটকাবে না।