ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের সংস্কৃতি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠানে আজ বুধবার (৩১ জুলাই) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ ও সরকারী আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বুধবার সকাল থেকে অনুষ্ঠান চলাকালীন এই উত্তেজনায় উদ্বিগ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, কলেজে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।
সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকিবের নেতৃত্বে তার সর্মথকরা কলেজের গেটে অবস্থান নিয়ে ভেতরে ঢুকতে চেষ্টা করেন। এ সময় সরকারি আনন্দ মোহন সরকারি কলেজে শাখার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে স্লোগান শুরু করে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পকেট খুলে দেয়। এ সময় কলেজ শাখার ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সবুজের নেতৃত্বে তার সর্মথকরা কলেজের ভেতরে অবস্থান নেয় ও স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় দু গ্রুপের মাঝখানে অবস্থান নেয় পুলিশ। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলে এ উত্তেজনা। পরে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবুসহ অন্যান্য অতিথি চলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান সবুজ দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে কমিটি পাওয়ার পর রকিবের একনায়কতন্ত্রের কারণে আমরা কোনো স্বাধীনতা পায়নি। তার আমলে কলেজ হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতো। মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম ছিল। কলেজ ছাত্রলীগ তা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। রকিব কলেজে ঢুকলে আবারও পুনাবৃত্তি ঘটবে। তাই রকিবকে প্রতিহত করেছি।
এদিকে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে এ উত্তেজনার বিষয়টি নজরে এসছে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবুর। অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন, ‘গেইটের সামনে উত্তেজনা কিসের জন্য। পদের জন্য নেতৃত্বের জন্য। নিজের লাভের জন্য আজ এসব দলাদলি। এসবের শিকার হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’
এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকিব দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলাম। আজ আমি আমার সমর্থকদের নিয়ে মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে কলেজে ঢুকতে পারছি না। আজকে নষ্ট রাজনীতির কারণে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, কলেজে গেইটের এপার ওপার শিক্ষার্থীদের অবস্থান সম্পূর্ণ তাদের রাজনৈতিক ব্যাপার। এ ব্যাপারে কলেজ প্রশাসন সম্পৃক্ত না। রাকিবুল ইসলাম রকিব আমার কলেজের ছাত্র না। ৪ বছর আগে থেকে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। বহিরাগতরা আমার বিরুদ্ধে শ্লোগান দিলে লাভ নেই। আমার কলেজের শিক্ষার্থী কিছু বললে সেটা আমরা শুনব।
কলেজ গফরগাঁও ছাত্র সমিতির সদস্য মোনায়েম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘রকিব ভাই বিবাহিত। ৪ বছর আগে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। তার তো সেই পদে থাকার কথা নয়। যার ছাত্রত্ব নেই সে কেন কলেজে ঢুকবে।’