কোনো শিক্ষক সংগঠন নয়, বগুড়ার নন্দীগ্রামের কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীছাউনিতে পড়ে থাকা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও শিফা নুসরাত। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আব্দুর রশিদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিজরুলে ভর্তি করান তিনি। সব হারিয়ে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ৮৮ বছরের বৃদ্ধ এই শিক্ষাগুরু খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন কুন্দারহাট বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীছাউনির মেঝেতে।
জানা গেছে, নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের ভাটগ্রামের আব্দুর রশিদ সত্তরের দশকে ডিগ্রি ও বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার সাতপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর নিজ উপজেলার বিজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ও কুন্দারহাট ইনছান আলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন। এছাড়া তিনি এরশাদ সরকারের সময় জাতীয় পার্টির নন্দীগ্রাম উপজেলার সভাপতি নির্বাচিত হন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোলাপ ফুল মার্কা নিয়ে নির্বাচনও করেন তিনি।
সে সময় তার সংসারে ছিল এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মেয়েকে বিয়ে দেন। কিছুদিন পর স্ত্রীও মারা যান। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে আব্দুর রশিদ বেশির ভাগ জমিজমা বিক্রি করে দেন। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন বগুড়া শহরে। যে জমিজমা অবশিষ্ট ছিল তা দ্বিতীয় স্ত্রী, মেয়ে ও শাশুড়ি নিজেদের নামে লিখে নেন। দুই বছর আগে বাড়ির জায়গাসহ সেই জমি তারা বিক্রি করে দেন। এরপর তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন দ্বিতীয় স্ত্রী। এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে তেমন কথা বলতে পারেন না তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি জানার পরে আমরা আব্দুর রশিদ সাহেবকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তার জন্য পোষাক কিনে দেয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগের সভাপতি, সমাজ সেবা কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।