যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত চাইলে এটিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিতে পারবেন মর্মে রায় ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচাপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ২৪ নভেম্বর এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনা(রিভিউ) আবেদনের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে চার সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।
২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করেন।
প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে দণ্ডিত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত পুরো সময়।
৪৫ ও ৫৩ ধারা ও দণ্ডবিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫ (এ) এর সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হয় তাহলে বুঝা যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে ৩০ বছর। কিন্তু আদালত যদি স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়, অথবা ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দণ্ডিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫(এ) প্রযোজ্য হবে না।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ সাতদফা অভিমত দেন। এরপর আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়।