মুলাদী পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা মূল্যের ১৪ শতাংশ জমি স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে দখল করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে সেখানে বালু ভরাট করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকাশ্যে এ দখল কার্যক্রম চললেও রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, গহর আলী মল্লিকের ওয়ারিশ ফজলু মল্লিক, ইসমাইল মল্লিক ও ছিদ্দিক মল্লিকের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের কাছ থেকে ওই জমি ক্রয় করেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রবিন রাঢ়ী। পরে রবিনসহ যুবলীগ নেতা সোহাগ রাঢ়ী ও সৈনিক পার্টির নেতা দাবিদার আবদুর রশিদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের এ জমি দখল করা হয়। দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্নিষ্ট এক ভূমি কর্মকর্তাও জড়িত রয়েছেন। ওই ভূমি কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেছেন দখলদাররা। গোপনে সব কাজ সম্পন্ন করার কয়েক দিন আগে বালু ফেলে ভরাট করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণকাজ চালানো হয়। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুলাদীর তেরচর গ্রামের প্রয়াত গহর আলী মল্লিক তেরচর মৌজার ৪৯৯ খতিয়ানের ২৮৫৭ নম্বর দাগের ১৪ শতাংশ জমি ১৯৬৫ সালে তৎকালীন মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (বর্তমানে সরকারি) নামে দলিল রেজিস্ট্রি দেন। বর্তমানে এ জমির বাজারমূল্য কোটি টাকার ওপরে।
অভিযোগের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম রবিন রাঢ়ী বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের কোনো জমি দখল করেননি। ফজলু মল্লিকের রেকর্ডকৃত ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে বালু ফেলছেন। বিদ্যালয়ের দাবি করা ১৪ শতাংশ জমি বিদ্যালয় সংলগ্ন কামাল ভূঁইয়াদের বাড়ির মধ্যে রয়েছে। সবপক্ষ কাগজপত্র নিয়ে বসলে এ সমস্যার সমাধান হবে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন হাওলাদার সমকালকে বলেন, ভোকেশনাল ভবন সংলগ্ন ১৪ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন এটা তার জানা ছিল না। এতদিন জমির কোনো দলিলও তার কাছে ছিল না। এ কারণে তিনি দখল কার্যক্রমে কোনো বাধা দিতে পারেননি। তিনি বলেন, আজই (গতকাল) একটি মাধ্যমে ওই জমির দলিল পাই এবং নিশ্চিত হই যে জমিটি বিদ্যালয়ের। ভরাট কাজ বন্ধ রাখার জন্য আগামীকাল (আজ) দাপ্তরিকভাবে দখলদারদের চিঠি দেব। প্রধান শিক্ষক বলেন, সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দলিল সূত্রে ৪ একর ২০ শতাংশ জমি রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ড আছে ৩ একর ৪০ শতাংশ।