ভারতে পাচার হওয়া ঝালকাঠির তৎকালীণ সময়ের ১২ বছরের এক কিশোরী সাত বছর দেশে ফিরতে পেরেছে। সোমবার তাকে মায়ের জিম্মায় ফিরিয়ে দিয়েছেন ঝালকাঠির একটি আদালত। গত ৫ মে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পর সোমবার সকালে তাকে ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে ওই তরুণীকে মায়ের জিম্মায় ফিরিয়ে দেন আদালতের বিচারক এম এ হামিদ।
মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জুন সকালে ওই কিশোরীকে খুলনায় একটি বাসায় কাজ দেয়ার কথা বলে একটি মানব পাচারকারী চক্র তাকে ঝালকাঠি থেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেয়া হয়। পরে ভারতের পুলিশের সহায়তায় বেসরকারি সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বেঙ্গালুরুর একটি সেল্টার হোমে রাখে। এ ঘটনায় বেঙ্গালুরুর কৃষনাগিরি জেলার হুডকো থানায় একটি মামলা করে ভারতীয় পুলিশ। ভারতের বিচার সম্পন্ন হওয়ার পরে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের মাধ্যমে তাকে গত ৫ মার্চ স্থলবন্দর বেনাপোলে বাংলাদেশের একটি সংগঠনের কাছে হস্তান্তর করে।
এদিকে এ ঘটনায় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ঝালকাঠির মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন মেয়েটির মা। ওই মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী বনি আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই তরুণী অপহরণের ঘটনায় তার মা আদালতের তৎকালীণ বিচারক মো. শফিকুল করিম ঝালকাঠি থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ওই মামলার আসামিরা হলেন খুলনার খালিশপুর থানার মুমিন হাওলাদারের স্ত্রী হাসিনা বেগম, একই এলাকার কবির হোসেনের স্ত্রী ঝুমুর আক্তার ও ঝালকাঠির ইন্দ্রজিৎ শিকদারের স্ত্রী মিনতি শিকদার। আসামিরা গ্রেফতার হলেও বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। মামলার ভিকটিম দীর্ঘ দিনেও উদ্ধার না হওয়ার কারণে মামলায়ও দীর্ঘসূত্রিতা ঘটে। তবে বর্তমানে ১৯ বছরের ওই তরুণী উদ্ধার হওয়ায় আসামিদের বিচার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।