রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচন আগামীকাল বুধবার। নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে শিক্ষক রাজনীতি। বর্তমান প্রশাসনের মেয়াদের শেষ মুহূর্তে এ নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত দুটি প্যানেল চূড়ান্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ১৭ ফেব্রুয়ারি। দুই বছর মেয়াদি এ কমিটিতে ২১টি কার্যনির্বাহী পদে নির্বাচন হচ্ছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ৬৮৮ শিক্ষক ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। একজন আহ্বায়ক ও ২০টি সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আহ্বায়ক পদে ভোট করছেন বর্তমান উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রাণরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান এবং সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দীন 'পন্থি' হিসেবে পরিচিত প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের 'দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ' সমর্থিত প্যানেল থেকে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু।
প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। পুরোনো বিরোধ ভুলে সবাই সবার কাছে ছুটছেন। অন্যবারের তুলনায় এবারের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচন কিছুটা ভিন্ন বলে মনে করছেন দলের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে শিক্ষকদের এই সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাবির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজে 'বিভেদ' থাকায় এবারের নির্বাচনের আলাদা গুরুত্ব থাকছে।
বিদায়ী স্টিয়ারিং কমিটির এক সদস্য বলেন, বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষের দিকে। এ ছাড়াও দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদ খালি হচ্ছে। এসব পদে নিয়োগ পেতে দলের নেতাদের সুপারিশ সরকার মূল্যায়ন করে। যেহেতু রাবিতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নতুন প্রশাসন দায়িত্বে আসবে সেজন্য এ নির্বাচন কিছুটা ভিন্ন আমেজ তৈরি করবে।
বর্তমান উপাচার্যপন্থি প্যানেলের আহ্বায়ক প্রার্থী অধ্যাপক হাবীবুর রহমান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের মধ্যে কিছুটা ঝামেলা আছে। রাজনৈতিক বিভেদও আছে। আমাদের প্যানেল জয়ী হলে এ সমস্যা সমাধান করে দলের স্বার্থে কাজ করব। দল ও প্রশাসন যে এক নয়, সেটি আমরা প্রমাণ করতে চাই।'
আরেক আহ্বায়ক প্রার্থী অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম টিপু বলেন, 'আমরা জয়ী হলে দলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসন করে এক হয়ে কাজ করব। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থাকবে।'
সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান বলেন, 'আগামীকাল জুবেরী ভবনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট হবে। আশা করছি, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব।'