রাবির হল থেকে শিক্ষার্থীকে মেরে বের করে দিলো ছাত্রলীগ - দৈনিকশিক্ষা

রাবির হল থেকে শিক্ষার্থীকে মেরে বের করে দিলো ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হলে ১৪ জুন রাতে এক আবাসিক ছাত্রকে হল থেকে বের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন ও তার অনুসারী তাসকিফ আল তৌহিদের বিরুদ্ধে। এবার মাঝরাতে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার সিট থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ওই শিক্ষার্থীকে হুমকি দেন এবং তার সহযোগী তৌহিদ ও পারভেজ হাসান জয় তাকে মারধর করে বের করে দেন বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ। 

ভুক্তভোগী মুন্না ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি লতিফ হলের ২৪৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। মারধরে অভিযুক্ত পারভেজ নবাব আবদুল লতিফ হল শাখা বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে তৌহিদ ছাত্রলীগ কর্মী।  

ভুক্তভোগী মুন্না অভিযোগ করেন, তিনি ৬ মাস আগে ওই কক্ষে ওঠেন। হল প্রশাসন তাকে ওই কক্ষটি বরাদ্দ দেয়। গত রাতে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ও তার অনুসারীরা তাকে সিট থেকে সরিয়ে ওখানে আরেক শিক্ষার্থীকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি সিট থেকে নামতে না চাইলে তাকে তৌহিদ ও পারভেজ গলায় ধাক্কা দেন ও কিল-ঘুষি দিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন।

হলের শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ২৩০ নম্বর কক্ষে বাংলা বিভাগের আসিফ নামের এক শিক্ষার্থী থাকতেন। এটি তার বরাদ্দ পাওয়া কক্ষ। গত রাতে তার কক্ষে ছাত্রলীগ নেতারা এক অনাবাসিক ছাত্রকে তুলে দেয়। আর তাকে ওই কক্ষ থেকে সরিয়ে ২৪৮ নম্বর (মুন্না ইসলামের) কক্ষে পাঠায় ছাত্রলীগের তৌহিদ ও পারভেজ। আসিফ এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করলে প্রাধ্যক্ষ শুক্রবার দুপুরে তাকে তার সিটে তুলে দেন।

হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন বলেন, তাকে মারধর করা হয়নি। এক শিক্ষার্থীর সমস্যা ছিল তাই সেখানে ডাবলিং করে থাকতে বলা হয়েছিল। মারধর হুমকি কিছুই ঘটেনি। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। ২৩০ নম্বর কক্ষে কাউকে তোলার বিষয়টি জানি না।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এএইচএম মাহবুবুর রহমান বলেন, সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী তার জায়গায় থাকবে। মারধরের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।

ঘটনার পর হল পরিদর্শন ‘সচেতন’ শিক্ষকদের

মুন্না ইসলামকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক। তারা শুক্রবার বেলা ১১টায় হল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীর কাছে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। পরে তারা হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের অবস্থান জানতে চান।

এসব শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখায়ের আলম মাসউদ, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান। হলে শিক্ষার্থী মারধর ও সিট বাণিজ্য বন্ধে সম্প্রতি এই শিক্ষকদের নেতৃত্ব প্রতিবাদী মানববন্ধন হয়। এ সময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কুদরত-ই জাহান উপস্থিত ছিলেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, হলে শিক্ষার্থীরা ন্যূনতম অধিকার ও সম্মান পাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থী নির্যাতন ও হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। রাজনৈতিক পরিচয় আছে বলে সাধারণ নিরীহ ছাত্রদের পেটাবে এটা হতে পারে না। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। প্রশাসন এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয় সেটিই দেখার বিষয়।

প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলার ক্ষমতা কারও নেই। একজন শিক্ষার্থীকে মেরে হল থেকে বের করার অভিযোগ উঠেছে। প্রাধ্যক্ষকে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065169334411621